আশাশুনির তেল মিল গুলোতে তৈরি হচ্ছে নিম্ন মানের সরিষার তেল

সচ্চিদানন্দদেসদয়,আশাশুনিঃ
আশাশুনির ছোটবড় হাট বাজারে অবস্থিত তেলের মিলে ভেজাল মিশানো হচ্ছে সরিষা তেলে৷ ভেজাল সরিষা তেল উৎপাদনের শীর্ষে এখন আশাশুনির বিভিন্ন এলাকা। বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের স্বল্প সময়ে অধিক লাভের আশায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ মানুষ৷ রীতিমতো গোডাউনে খুলে প্রকাশ্যেই চলছে ভেজালের কারবার৷ প্রশাসনের নাকের ডগায়  আশাশুনির বেশ কিছু সংখ্যক মিলে ও বিভিন্ন বাজারে এই ভেজাল সরিষা তেল তৈরির কারবার চললেও আশ্চর্যজনক ভাবে প্রশাসনও নীরব দর্শকের ভুমিকায়৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন এই সকল মিল ও  বাজার  থেকে কয়েকশ লিটার  ভেজাল সরিষার তেল উৎপাদন হচ্ছে। যা আশাশুনির প্রত্যন্ত অঞ্চল সহ আশ পাশ  জেলার উপজেলা গুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে।জানা গেছে,কম দামের নিম্ন মানের তেল ও পাম ওয়েল জাতীয় তেলের  মধ্যে সরিষার তেলের রং আনতে ব্যবহার করা হচ্ছে এক ধরনের ক্ষতিকারক রাসায়নিক তরল পদার্থ। এক টিন সাদা বা পাম তেলে এক ড্রপার বা কয়েক ধরণের রাসায়নিক সেই বিষাক্ত তরল ব্যবহার করে মিশ্রণ করলেই কমদামী তেল সরিষার তেলের রং ধারণ করছে। কোথাও সাদা বা পাম তেলের সঙ্গে  মেশানো হচ্ছে সামান্য খাঁটি সরিষার তেলও।
অপরদিকে, এক টিন তেলে খাঁটি সরিষার তেলের ঝাঁঝ আনতে ব্যবহার করা হচ্ছে অপর এক প্রকার বিষাক্ত দম বন্ধ করা ঝাঁঝ যুক্ত তরল পদার্থ। তেলে ঝাঁঝ আনতে এই বিষাক্ত ঝাঁঝ যুক্ত তরল এক টিনে এক ফোঁটা মেশানো মাত্রই কমদামী সাদা তেল ও পাম তেল খাঁটি সরিষা তেলের মত ঝাঁঝ বিশিষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে, সাধারণ মানুষের বোঝবার উপায় থাকছে না, এই বিষাক্ত তেল খাঁটি না কমদামী নামমাত্র সরিষার তেল। ফলে খাঁটি সরিষার তেলের তুলনায় একই রকম দেখতে এই কম দামের ভেজাল সরিষার তেল নিজেদের অজান্তেই কিনছেন সাধারণ মানুষ।জানা গেছে, শহর ও গ্রাম-গঞ্জের হাটে বাজারের দোকানদাররা যে দামে বলবেন সেই দামের  তেলের টিন তৈরি করে দিচ্ছেন এই সকল অসাধু ভেজাল তেল তৈরির কারবারিরা। খাঁটি সরিষার তেলের তুলনায় এক টিন ভেজাল সরিষার তেল ১০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত কম দামে বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। টিন প্রতি  টাকা কম হওয়ায়, কম দামে খাঁটি সরিষার তেলের মত ঝাঁঝ যুক্ত ভেজাল তেল, খাঁটি সরিষার তেল বলে বেশি লাভের আশায় হাটে বাজারে কেজি বা লিটার হিসেবে বিক্রি করছেন সাধারণ দোকানদাররা। এই সকল ভেজাল সরিষার তেল শহর থেকে গ্রাম-গঞ্জের গৃহস্থের বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে । ফলে, বিষাক্ত রাসায়নিক তরল সাধারণ মানুষ থেকে ছাত্র ছাত্রীদের শরীরে দিনের পর দিন নিজেদের অজান্তেই প্রবেশ করছে। আশাশুনির  তেল মিল গুলোতে ভেজাল সরিষার তেল তৈরির কারবার চললেও আশাশুনির থানা স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, বাজারে মোবাইল কোর্ট চালাতে আসলে এক শ্রেণির দোকানদার ও তেল মিলে অফিসারদের অভিযান চালানোর খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেজাল তেল উৎপাদনকারীরা সেই সময়ের জন্য নিজেদের তেল মিল ও গোডাউনের মেনে গেটে তালা মেরে উৎপাদন সাময়িক ভাবে বন্ধ রেখে দেন। অফিসাররা চলে যাবার পর থেকেই ফের ভেজাল তেল তৈরির রমরমা শুরু হয়ে যায় ওই সকল মিল ও গোডাউনে। আশাশুনি বাসীদের  দাবি, একসঙ্গে সমস্ত ভেজাল তেল মিল ও ভেজাল মাল বিক্রয় দোকান গুলিতে এক সাথে অভিযান চালাক প্রশাসন। যাতে ভেজাল তেলে ও ভেজাল দ্রব্য বিক্রয়কারী কারবারিরা নিজ নিজ মিলে বা  দোকানে তালা মারার সুযোগ না পান। তবেই সমস্যা সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে সচেতন মহল মনে করেন।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)