খুলনায় মৎস্যজাত পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে করণীয় শীর্ষক কর্মশালা

আব্দুর রশিদ, ডুমুরিয়া:
নিরাপদ মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে করণীয় শীর্ষক কর্মশালা বিভাগীয় উপ-পরিচালক সম্মেলন কক্ষে এক দিনের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার ২৪ফেরুয়ারি সকাল ১০টায় খুলনাউক্ত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড, ফারহানা তাসলিমা, প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তর খুলনা বিভাগের উপ পরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খুলনা বিভাগীয় সহকারী উপ পরিচালক মোঃ মনিরুল মামুন,

সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুল মান্নান আকন্দ, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সেলিম সুলতান, জিল্লুর রহমান রিগান, প্রদীপ কুমার দাম,সৈকত মল্লিক, মোঃ আলমগীর হোসেন, মোঃ সাইদুজ্জামান, সমির কুমার, জেরিন সুলতানা, মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তা, মৎস্য চাষী ও অন্যান্য উল্লেখ্য বাংলাদেশের মৎস্য খাত সাম্প্রতিক বছরগুলোয় উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে গেছে।

বিগত তিন দশকে দেশে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ২৫ গুণ। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭৪ হাজার ৪২ দশমিক ৬৭ টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রফতানির মাধ্যমে ৫ হাজার ১৯১ দশমিক ৭৫ কোটি টাকা আয় করেছে বাংলাদেশ। এছাড়া স্বাদুপানির মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে দেশটির অবস্থান ২য়, অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ আহরণে বিশ্বে ৩য়, বদ্ধ জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে ৫ম, বিশ্বে ইলিশ আহরণকারী ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম, তেলাপিয়া উৎপাদনে বিশ্বে ৪র্থ এবং এশিয়ার মধ্যে ৩য় স্থানে রয়েছে। এসব পরিসংখ্যান বিশ্বব্যাপী মৎস্য শিল্পে বাংলাদেশকে একটি রোল মডেলে পরিণত করেছে। বাংলাদেশে শুধু মৎস্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধিই হয়নি বরং বলা যেতে পারে, মাছ ও মাছজাত পণ্যের নিরাপত্তা ও গুণগত মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যেও এগিয়ে যাচ্ছে। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে নিরাপদ মাছ উৎপাদনে যে অগ্রগতি হয়েছে তা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি আমাদের অর্জনগুলোর কারণ বিশ্লেষণ করা এবং এখনো সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবেলা করা যায় তার দিকে দৃষ্টিপাত করা উচিত।

কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে মৎস্য উৎপাদনে নিরাপত্তার মান বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সরকার মাছের খামার, মাছ প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট ও সামুদ্রিক খাবারের বাজার নিরীক্ষণের জন্য কঠোর আইন চালু করেছে। এ নিয়মগুলোর ফলে পানির গুণ-মান ব্যবস্থাপনা, সঠিক খাদ্য ব্যবহার, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলনের মতো দিকগুলোর উন্নয়ন হয়েছে, উপরন্তু সরকারের পক্ষ থেকে মাছচাষী ও মাছ প্রক্রিয়াকারীদের নিরাপদ মাছজাত পণ্য উৎপাদনের জন্য সর্বোত্তম পদ্ধতি সম্পর্কে জানানোর জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচি এবং প্রশিক্ষণ উদ্যোগ চালু করা হয়েছে।

নিরাপদ মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে । অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সজ্জিত আধুনিক পরীক্ষাগার গুলোতে মাছের নমুনার গুণগত মান কঠোরভাবে পরীক্ষা করতে করছেন । সংস্থাগুলোর দ্বারা মাছ ও মাছজাত পণ্যগুলো আন্তর্জাতিক ভাবে নির্ধারিত সুরক্ষা মানগুলো অর্জন করতে পেরেছে। এসব প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশের মৎস্যজাত পণ্যের সামগ্রিক মানোন্নয়নে সফল হয়েছে, যা শুধু অভ্যন্তরীণ ব্যবহারই শক্তিশালী করেনি, বরং বাংলাদেশের মৎস্য খাতের রফতানি সম্ভাবনাও বাড়িয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)