শ্যামনগরে রাস্তার জমি নিয়ে ৭জন সংখ্যালঘুকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম

রঘুনাথ খাঁ ঃ রাস্তা বড় করতে দ্বিতীয়বার জমি ছেড়ে দিতে রাজী না হওয়ায় নারীসহ সাতজন সংখ্যালঘুকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় নির্যাতিতদের মামলার পাশপাশি হামলাকারিদের মামলা রেকর্ড করেছে পুলিশ। গত বুধবার নির্যাতিত বিশ্বজিৎ জোয়ার্দারের ও বৃহষ্পতিবার হামলাকারি বাবলু মোড়লের স্ত্রী জামিলা খাতুন বাদি হয়ে শ্যামনগর থানায় যথাক্রমে ৭ ও ৮ নং মামলা দায়ের করেন। প্রতিটি মামলায় ১০ জন করে আসামী করা হয়েছে।শ্যামনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নৈকাটি গ্রামের শৈলেন্দ্র জোয়ার্দারের ছেলে বিশ্বজিৎ জোয়ারদার জানান, গাড়াখালি গ্রামের ফজলু মোড়ল, বাবলু মোড়ল, জিয়াদ মোড়ল ও নৈকাটি গ্রামের হাফিজুর মোড়লসহ কয়েকজন গাড়াখালি মৌজার জেএল-৬৮ ও হাল ২৮ দাগে তাদের ১৭ শতক জমির মধ্যে রাস্তার জন্য কিছু জমি ছেড়ে দিতে বলে। কোন প্রকার টাকা পয়সা ছাড়া তারা কিছু জমি ছেড়ে দেন। এরপরও গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পর তারা আরো বেশি জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ ফেব্রæয়ারি সকালে তারা ওই জমিতে বোরো ধান লাগানোর সময় ফজলু মোড়ল, বাবলু মোড়ল, জিয়াদ মোড়ল ও নৈকাটি গ্রামের হাফিজুর মোড়ল, আশরাফুল গাজী, এন্তাজ গাজী, হযরত আলী গাজী, দাউদ আলী গাজী, হামিদ মোল্লা ও আব্দুল বারীসহ ২৫/৩০ জন তাকেসহ সুব্রত গায়েন, ভাই প্রফুল্ল জোয়ারদার, কৃষ্ণ জোয়ারর্দার, ভাইয়ের স্ত্রী খুকু মনি, পলাশ জোয়ারদার পথচারি নূর হোসেনসহ ১০জনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। এদের মধ্যে প্রথমাক্ত সাতজনকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সুব্রত গায়েনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তারাও শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।বিশ্বজিৎ জোয়ার্দার আরো জানান, রেকডীয় জমি দ্বিতীয়বার রাস্তার জন্য ছেড়ে দিতে রাজী না হওয়ায় তাদের উপর হামলা চালানো হলো। পরিকল্পনা অনুযায়ি হামলাকারিদের পক্ষে বারী গাজী ও আবু দাউদ গাজী নিজেদের শরীরে কেটে ছিঁড়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। ৮ ফেব্রæয়ারি রাতে মামলার খবর পেলে তারা দুইজন গ্রেপ্তার এড়াতে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। অথচ ৯ ফেব্রæয়ারি পুলিশ হামলাকারি বাবলু মোড়লের স্ত্রী ও আব্দুল বারী গাজীর মেয়ে জামিলা খাতুনের দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা রেকর্ড করেছে। শুধু তাই নয়, পুলিশ তাদের মামলা রেকর্ডের তথ্য বিবরণীতে কৈখালী ইউনিয়নের স্থলে রমজাননগর ইউনিয়ন, ঘটনাস্থল গাড়াখালির পরিবর্তে নিদয়াসহ বিভিন্ন ভুল তথ্য উল্লেখ করেছে। পাল্টা মিথ্যা মামলায় তাদের(বিশ্বজিৎ’) সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জখম হওয়া ৬ জনসহ ১০ জনকে আসামী শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে।বিশ্বজিৎ জোয়ারর্দার বলেন, জিয়াদ মোড়ল, এন্তাজ গাজী ও দাুদ গাজী গাড়াখালি গ্রামের গনি মোড়লের স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা মামলার আসামী। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আব্দুস সবুর মোড়লের দায়েরকৃত মামলাটির বিচার কার্যক্রম হাইকোর্টে স্থগিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে শ্যৗামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর মোল্লা বলেন, জমি জায়গা কার সেটা তাদের দেখার বিষয় নয়, মারামারি হয়েছে, উভয়পক্ষ আহত হয়েছে। উভয়পক্ষের অভিযোগ পেয়ে মামলা রেকর্প কয়েছে। তথ্য বিবরনীতে ভুল থাকলে সংশোধন করা হবে।

 

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)