সাতক্ষীরায় স্প্রে করে চারজনকে অজ্ঞান: ৯ ভরি সোনার গহনা ও দেড় লাখ টাকা লুট
রঘুনাথ খাঁ:
ঘরের মধ্যে চেতনানাশক স্প্রে করে পরিবারের সদস্যদের অজ্ঞান করার পর জানালার গ্রীল কেটে এক ব্যবসায়ির বাড়ি থেকে নয় ভরি সোনার গহনা ও দেড় লাখ নগদ টাকা লুট করা হয়েছে। রবিবার মাঝরাতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দক্ষিণ চুপড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই পরিবারের চার সদস্যকে সোমবার সকালে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অজ্ঞান হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দক্ষিণ চুপড়িয়া গ্রামের মন্তেজ সরদারের ছেলে সার ও কীটনাশক বিক্রেতা মুজিবর রহমান (৫৫), তার স্ত্রী মেহেরুন্নেছা (৪৫), তাদের মেয়ে ফারজানা আক্তার (২৫) ও জামাতা মনির খান(৩০)।
দক্ষিণ চুপড়িয়া গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে ঝাউডাঙা ডিগ্রী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র মেহেদী হাসান জানান, তার চাচা মুজিবর রহমানের “খালিদ এন্টারপ্রাইজ” নামে বাড়ি সংলগ্ন সার ও কীটনাশক বিক্রির একটি দোকান রয়েছে। রবিবার রাত ১১টার পর চাচা মুজিবর রহমান, চাচী মেহেরুন্নেছা, চাচাত বোন ফারজানা ও দুলা ভাই বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারি ব্যবস্থাপক মনির খাঁন খাওয়া দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। রবিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে তার চাচাত ভাই মনিরুলের দুই বছরের বাচ্চা মোবাশ্বের রহমান অসুস্থ হয়ে পড়ায় চাচা মুজিবর রহমানকে ডাকাডাকি করা হলে সাড়া মেলেনি। একপর্যায়ে সোমবার সকাল স্থানীয় কয়েকজন চাচার দোকানে সার কিনতে এসে না পেয়ে বাড়িতে যায়। এ সময় চাচা দরজার মুখে পাগলের মত হাসছিলেন। একপর্যায়ে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঘরে ফুকে তারা দেখতে পান যে চাচা ব্যতীত চাচী ও তাদের মেয়ে জামাই সকলেই ঘরের মধ্যে অচেতন হয়ে পড়ে আছে। দোতলার চিলে কোঠার দরজা ও নীচের ঘরের জানালার কাঠের বাল খোলা। ওয়ারড্রপ, আলমারি, শোকেজ ভাঙা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে বিভিন্ন জিনিসপত্র। গভীর রাতে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা জানালা দিয়ে চেতনানাশক স্প্রে করে পরিবারের চারজনকে অচেতন করে সোনার গহনা ও নগদ টাকাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে বলে তিনি মনে করছেন। তবে মুজিবর রহমানের চেতনা না ফেরা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বলা যাবে না।
ঝাউডাঙা ডিগ্রী কলজের শিক্ষক মোঃ ইদ্রিস আলী আসাদ ওরফে বাবু জানান, খবর পেয়ে সোমবার সকালে তার ভগ্নিপতিসহ চারজনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তিনি। অজঞান পাটিংর সদস্যরা তার বোন মেহেরুন্নেছার চার ভরি সোনার গহনা, ভাগ্নি ফারজানার ৫ ভরি সোনার গহনা ছাড়াও রবিবার ভাগ্নিজামাই এর ব্যাংক থেকে তুলে রাখা টাকা ও দুলা ভাই মুজিবর রহমানের ব্যবসার টাকা সব মিলিয়ে দেড় লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ অসীম কুমার সরকার জানান, মুজিবর রহমানসহ তাদের পরিবারের চারজনের চেতনা কখন ফিরবে তা এই মুহুর্তে বলা যাবে না। তবে মনির খানের বাচ্চা সওদামনি আশঙ্কামুক্ত।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামিনুল হক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ও সদর হাসপাতালে উপপরিদর্শক মেহেদী হাসানকে পাঠানো হয়েছে।