সাতক্ষীরা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কালো ব্যাজ ধারণ ও প্রতিবাদ সভা
নিজস্ব প্রতিনিধি:প্লাটিনাম জুবলী উদযাপন কমিটির রাতারাতি নাম পরিবর্তন অবৈধ? প্লাটিনাম জুবলী বাস্তবায়ন কর, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ অ্যালামনাই এাসোসিয়েশনের প্রচার বন্ধ কর। প্লাটিনাম জুবলীর ফি কমাও, সকল ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত কর। ব্যবসায়ী চিন্তা বন্ধ করে প্লাটিনাম জুবলী বাস্তবায়ন কর। বৈষম্য দূর করে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের প্লাটিনাম জুবলী উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ চাই। বৈষম্যহীন প্লাটিনাম জুবলীর বাস্তবায়ন চাই ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্লেকার্ড নিয়ে সাতক্ষীরা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কালো ব্যাজ ধারণ ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর ২০২৪) দুপুর সাড়ে ১২ টায় সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে এ কালো ব্যাজ ধারণ ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো: মুনসুর রহমান, মো: বায়েজীদ হাসান, মো: আব্দুল্লাহ বিশ^াস, আফজাল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, মো: নুরুজ্জামান, আসাদুল্লাহ আল গালিব (বাবলা) প্রমূখ। বক্তারা বলেন, ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ। এই কলেজের শুরু থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রায় ৬ লক্ষ ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করেছে। বর্তমান শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ২০ হাজার। অনেকে ঝরে গেছে, অনেকে মৃত্যুবরণও করেছে। যারা আছেন তাদের মধ্যে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষক, দিনমজুর, কুলি, রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালক, মটর সাইকেল মিস্ত্রী ও চালক, মুদি দোকানদার, সুইপার, ঝাড়–দার, আয়া, ড্রাইভার, নাপিত, অফিস সহকারীর সংখ্যা বেশি। এই কলেজের ৭৫ বছর (প্লাটিনাম জুবলী) ২০২২ সালে অতিক্রম করেছে। তখন বসাবসি হয়েছিল, অনুষ্ঠান হয়নি। গত ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ প্লাটিনাম জুবলী অনুষ্ঠান বাস্তবায়নের জন্য একটি উদযাপন কমিটি গঠিত হয়েছিল। সবাই মনে করেছিল অনুষ্ঠানটি প্রাক্তন ও চলমান শিক্ষার্থীদের সার্বজনীন মিলন মেলায় পরিণত হবে। তবে নবগঠিত কমিটির আয়োজকবৃন্দ বর্তমান দ্রব্যমূল্যের বাজার, ব্যবসায়ে মন্দা ও শিক্ষার্থীদের আর্থিক দুরাবস্থা বিবেচনা না করে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন ফি প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ২০০০ (দুই হাজার) টাকা ও চলমান শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ১৫০০ (পনের শত) টাকা নির্ধারণ করে। আয়োজক কমিটির নেতৃবৃন্দকে বার বার নিবন্ধন ফি কমানোর জন্য বলেছিলেন, তারা সকল-শ্রেণি-পেশার প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিষয়টি বিবেচনা করেনি। বরং প্লাটিনাম জুবলী উদযাপন কমিটির রাতারাতি নাম পরিবর্তন, চলমান শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ১৫০০ (পনের শত) টাকার পরিবর্তে ১০০০ (এক হাজার) টাকা নির্ধারণ করে আনু. প্রাক্তন ৩ হাজার শিক্ষার্থী ও চলামন ২ হাজার শিক্ষার্থী মিলে প্রাথমিকভাবে ৫ হাজার শিক্ষার্থীর নিবন্ধন সম্পন্ন হবে ধারণা করেই একটি উচ্চাভিলাষী অনুষ্ঠানের বাজেট ঘোষণা করেন। তবে নিবন্ধন সংখ্যা বেশি হলে আদায়কৃত অর্থের যথোপযুক্ত খরচের বিষষে আলোচনা করেনি। উপরিউক্ত বিষয়াদি নিয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ অনলাইন সংবাদপত্রে ও গত ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ স্থানীয় দৈনিক ‘‘সাতক্ষীরা কলেজের প্লাটিনাম জুবলী’র নিবন্ধন ফি রিভিউ করার আহবান রাজনীতিকদের’’-শিরোনামে সংবাদের মধ্যে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সভাপতি ও সম্পাদক, প্রাক্তন ছাত্রনেতারা তাদের মতামত তুলে ধরেছিলেন। সেটিও তারা কর্ণপাত করেনি। যা আয়োজক নেতৃবৃন্দের গর্জজিয়াস মনোভাবাপন্নের সামিল। তারা সকল মত-দ্বিমত ভুলে এই বাজেট (বিশেষ করে ক্যাপ জনপ্রতি ১৫০ টাকা হিসেবে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, মগ জনপ্রতি ১৫০ টাকা হিসেবে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাগ আইর্ডি কার্ড জনপ্রতি ৭০ টাকা হিসেবে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, বাজি বাবদ ২ লক্ষ টাকা খরচের বাজেট বাদ দেওয়ার পাশাপাশি সুভেনু প্রতি পিচ ৫০০ টাকা হিসেবে ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, প্যান্ডেল, মঞ্চ, লাইটিং, জেনেরেটর, চেয়ার বাবদ ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, সাউন্ড বাবদ ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিল্পী থাকা ও খাওয়া বাবদ ১৩ লক্ষ টাকা, প্রচার ও প্রচারণা বাবদ ২ লক্ষ টাকা, র্যালির সাজ-সজ্জা বাবদ ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, আইটি বাবদ ১ লক্ষ টাকা, রিজার্ভ বাবদ ৫ লক্ষ টাকা) কমিয়ে একটি সহননীয় এবং গ্রহণযোগ্য নিবন্ধন ফি নির্ধারণ করলে নতুন করে বৈষম্যের সৃষ্টি হতো না, অনেকে প্রাক্তন ও চলমান শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ পেতো বলে প্রত্যাশ করেন বক্তারা।