রক্তঝরা বিজয়ের মাস শুরু

অনলাইন ডেস্ক:

শুরু হলো রক্তঝরা গৌরবোজ্জ্বল বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। এ মাসেই বাঙালি পেয়েছিল তার বহু কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। মহান মুক্তিযুদ্ধের নয়টি মাস বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবের। ১৯৭১-এর ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর প্রতিটি ক্ষণ আজো অবিস্মরণীয়। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেও অসীম সাহসে লড়াই করেছে বাংলা মায়ের বীর ছেলেরা। দখলদার পাকিস্তানি বর্বর সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে ছিনিয়ে এনেছে বিজয়। পৃথিবীর বুকে এ মাসেই রচিত হয়েছিল এক অমর গাথা– বাঙালির স্বাধীনতা, একটি মানচিত্র, একটি পতাকা।

১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর বাংলার দৃশ্যপট ছিল গনগনে উত্তপ্ত। এই সময়ে সারাদেশে মুক্তিযুদ্ধ সর্বাত্মক রূপ পেয়েছে। পাকিস্তানি বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে। প্রায় সারাদেশ জুড়েই একই চিত্র। যুদ্ধ আর যুদ্ধ।

১৯৭১ সালে এই দিনে নিউইয়র্ক টাইমসের পত্রিকার এক রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি পাবার ফলে পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক জান্তাদের নির্দেশে সামরিক বাহিনীর লোকেরা পুনরায় গ্রামবাসীদের হত্যা এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেবার বর্বর অভিযান শুরু করেছে। গেরিলা সন্দেহে জিঞ্জিরার কতজন যুবককে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে হত্যা করেছে তার ইয়ত্তা নেই। বুড়িগঙ্গার অপর পাড়ের এই গ্রামটিতে অন্তত ৮৭ জনকে সামরিক বাহিনীর লোকেরা হত্যা করেছে। এদের অধিকাংশই যুবক। নারী ও শিশুরাও ওদের হাত থেকে রেহাই পায়নি।

’৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা অপারেশন চালিয়ে ঢাকায় দুজন মুসলিম লীগ কর্মীকে হত্যা করে। বাকি দুজনকে বুলেটবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে, মুক্তিযোদ্ধারা শেষরাতের দিকে সিলেটের শমসেরনগরে অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে পাকবাহিনীকে নাজেহাল করে তোলে। মুক্তিবাহিনীর তীব্র আক্রমণে পাকবাহিনী এই এলাকা থেকে পালাতে শুরু করে। মুক্তিবাহিনী টেংরাটিলা ও দুয়ারাবাজার মুক্ত ঘোষণা করে। মুক্তিবাহিনীর অপারেশন অব্যাহত থাকায় পাকবাহিনী এই জেলার গারা, আলিরগাঁও, পিরিজপুর থেকে তাদের বাহিনী গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়।

আজ মহান বিজয় অর্জনের ৪৮ বছরে বাংলাদেশ। শোক ও শ্রদ্ধায় মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণের মধ্য দিয়ে পার হবে বিজয়ের মাস। সম্মান জানানো হবে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ ও তাদের শৌর্যবীর্যের প্রতি।

মাসব্যাপী উৎসাহ-উদ্দীপনায় এবং নানা কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ পালন করবে বিজয়ের মাসটি। প্রতিদিনই নানা কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করবে এবং তাদের মাগফেরাত কামনা করবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)