কেশবপুরে পিএইচডি- ডিগ্রী অর্জনকারী প্রভাষক ডক্টর হাদীউজ্জামান সোহাগকে সংবর্ধনা প্রদান

এস আর সাঈদ:কেশবপুরের কৃতিসন্তান ড. মোঃ হাদীউজ্জামান সোহাগ, শিক্ষাঙ্গনে উচ্চ গবেষণা ও মান-সম্পন্ন আদর্শবান শিক্ষক হিসেবে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সুখ্যাতি অর্জন করায় গত ২১ শে নভেম্বর ঢাকা গাউছুল আজম মসজিদ কমপ্লেক্স সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাক-কর্মচারী সংগঠন (জমিয়াতুল মুদারেছীন) এর পক্ষ থেকে তাঁকে বিশেষ সংবর্ধনা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। এ সময় অনুষ্ঠানে এ এম এম বাহাউদ্দীন (সম্পাদক দৈনিক ইনকিলাব)-এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. মোঃ শামছুল আলম ( উপাচার্য ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. শাহ নাওয়াজ দিলরুবা খান ( মহা পরিচালক মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর), প্রফেসর মুহাম্মদ শাহ আলমগীর ( চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড)। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন এখন পর্যন্ত আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত দেশের ফাজিল কামিল মাদ্রাসার শিক্ষকদের মধ্যে ২০৬ জন PHD ডিগ্রি অর্জন করেছেন। যার মধ্যে ড. মোঃ হাদীউজ্জামান সোহাগ অন্যতম একজন গবেষক। তিনি আরো বলেন পিএইচডি গবেষকদের গবেষণা ও নিরলস পরিশ্রমের কারণে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও আরবি বিশ্ববিদ্যালয় যেমন এগিয়ে যাচ্ছে তেমনি সমৃদ্ধ হচ্ছে এ দেশের মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা, পরিশেষে তিনি গবেষকদের গবেষণালব্ধ যে, জ্ঞান অর্জন করেছেন তা শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে উদাত্ত আহ্বান জানান। ড. মোঃ হাদীউজ্জামান সোহাগ ২০২১ সালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ফিলোসফি PHD অর্জন করেন। তাঁর গবেষণা শীর্ষক অভিসন্দর্ভ ছিল এছাড়াও আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ে তার একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের কাজ চলমান। জনাব হাদীউজ্জামান সোহাগ যশোর জেলাধীন কেশবপুর পৌরসভার একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অব:প্রাপ্ত মাগুরা জেলা EPI সুপারেন্টেন মোঃ মোবাশ্বার হোসেন ও বেগম রাজিয়া হোসেনের একমাত্র সন্তান। শিক্ষা জীবনে তিনি কওমী মাদরাসা হতে দাওরা হাদীস শেষ করে আলিয়া মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও আলিম পাশ করেন। এরপর তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধা তালিকায় ভর্তি হন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণীতে বি.এ (অর্নাস) এম. এ স্নাতকোত্তর ও এমফিল ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষা জীবনে সকল পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়ে একাডেমিক মেধা বৃত্তি সহ বিভিন্ন পদক ও এ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তিনি পড়ালেখার পাশাপাশি নানা ধরনের সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। কর্মজীবনে তিনি ২০১৬ সালে NTRCA এর মাধ্যমে প্রথম মেধা তালিকায় প্রভাষক হিসেবে ভালুকঘর আজিজিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি যশোর আলহাজ্ব মতিউর রহমান মহিলা ডিগ্রী ফাজিল মাদ্রাসায় যোগদান করে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন। মানসম্মত গুণগত শিক্ষাদান এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে নানা কার্যকর ভূমিকা রাখায় তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদাহরণে পরিণত হয়েছেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা ড. হাদীউজ্জামান সোহাগ এর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য ভূয়সী প্রশংসা করে তাকে অভিনন্দন জানান, সেই সাথে তাকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করে নেন। একই সাথে অনুষ্ঠানের সবাই তাঁর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন। এ সময় ড. হাদিউজ্জামান সোহাগ তার পিএইচডি সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজার প্রফেসর ড. মুহা. বিলাল হুসাইন এর প্রতি বিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন আল্লাহর অশেষ রহমতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এ সাফল্য পেয়েছি। এটা কঠিন ত্যাগ-তিতিক্ষা ও নিবিড় অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে অর্জিত সাফল্য। আমি আরো বেশ কিছু ইসলামিক ও অন্যান্য বিষয় গবেষণা করছি। নিশ্চয়ই আমার এ গবেষণা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজে আসবে ইনশাআল্লাহ। যেটা আমার সার্থকতা। তিনি শুভাকাঙ্ক্ষী ও দেশবাসী সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)