ইউক্রেনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি পুতিনের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ বাহিনীকে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) এ-সংক্রান্ত একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলার অনুমতির জবাব দিতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন পুতিন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে ডিক্রিতে বলা হয়েছে, পারমাণবিক শক্তিধর কোনো দেশের সমর্থন নিয়ে রাশিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হলে পাল্টা জবাবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে মস্কো।

গত রোববার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার জন্য অনুমতি দেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই অনুমতির পর ইউক্রেন মার্কিন অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় হামলা শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের এ অনুমোদনের দু’দিনের মধ্যে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার বিষয়ক ডিক্রিতে স্বাক্ষর করলেন পুতিন।

মঙ্গলবার রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের এক হাজারতম দিবস পার করছে রাশিয়া-ইউক্রেন। এ দিনেই তিনি এ সংক্রান্ত একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পুতিনের মুখপাত্র এবং রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ।

নতুন এই ডিক্রিতে বলা হয়েছে, যেসব দেশের পরমাণু অস্ত্র নেই, তাদেরকে যদি তৃতীয় কোনো দেশ বা পক্ষ এ ধরনের বিধ্বংসী অস্ত্র প্রদান করে- সেক্ষেত্রে সেসব দেশের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে রাশিয়া।

মঙ্গলবার মস্কোতে ক্রেমলিন কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে পেসকভ বলেন, পরমাণু অস্ত্র নেই- এমন কোনো আগ্রাসী দেশের সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধ কোনো দেশ যদি জোটবদ্ধ হয়, তাহলে তা আর একক নয়, বরং যৌথ হামলায় পরিণত হয়। আর এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের নীতি অক্ষুন্ন রেখে যে পদক্ষেপ নেয়া উচিত, আমরা সেটিই নিয়েছি।

পেসকভ আরো বলেন, রাশিয়া সবসময় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করার বিপক্ষে, আমরা শুধু আমাদের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা রক্ষার জন্য এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।

রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, জো বাইডেনের অনুমতির প্রতিক্রিয়া হিসেবে নতুন এই ডিক্রি জারি করেছেন পুতিন। ক্রেমলিনের সংবাদ সম্মেলনে পেসকভও এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন। ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান না করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য তদবিরের জেরে কয়েক বছর টানাপোড়েনের পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী, যা এখনো চলছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজে এই অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ অভিযানে প্রায় তিন বছরে উভয়পক্ষের লাখ-লাখ সামরিক-বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)