স্টারলিংক বাংলাদেশে আনতে চায় সরকার, প্রস্তুত ইলন মাস্কও
প্রযুক্তি ডেস্ক:
দেশে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট–সেবা চালু করতে চাইছে সরকার। বৈশ্বিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের সঙ্গে এরই মধ্যে আলাপ শুরু করেছে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা।
মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের মহাকাশবিষয়ক সংস্থা স্পেসএক্সের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধিদল সম্প্রতি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেছে। এসময় জানা গেছে, স্টারলিংক বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পুরোপুরি প্রস্তুত।
বাংলাদেশে স্পেসএক্স ব্যবসা করতে চাইলে, মানতে হবে কিছু নিয়মও। এরই মধ্যে বিটিআরসি এক খসড়া গাইডলাইনও প্রকাশ করেছে। এতে জানা গেছে, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ ব্যক্তিদের শনাক্তকরণে এনটিএমসি বা বিটিআরসিকে তথ্য প্রদানের উদ্দেশ্যে লাইসেন্সধারীর সিস্টেমে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি থাকতে হবে। বেআইনি বা নাশকতামূলক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ ও শনাক্তের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারবে কমিশন। এছাড়া সরকারের জারি করা নির্দেশনা ও আদেশ মেনে চলতে হবে স্যাটেলাইট কোম্পানিকে।
গত তিন বছরে স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ব্রডব্যান্ড সেবা চালুর জন্য অনুমোদন চেয়ে স্টারলিংক বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছে। গত বছর স্টারলিংক বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল)-এর মাধ্যমে প্রযুক্তিগত পরীক্ষার অনুমোদন পেয়েছিল। ফলাফলে দেখা যায়, এটি ১৫০ এমবিপিএস পর্যন্ত ডাউনলোড গতির আশা দেখিয়েছে।
গত ২১ অক্টোবর স্টারলিংকের গ্লোবাল লাইসেন্সিং পরিচালক রেবেকা স্লিক হান্টারের সঙ্গে বৈঠকের বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, যদি স্টারলিংক গত জুলাইয়ে কার্যকর হতো, তবে ইন্টারনেট ব্লকডেগুলোর প্রভাব কম হতো।
স্টারলিংক কার্যক্রম শুরু করতে এখনও কিছু বাধা অতিক্রম করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, স্টারলিংক গ্রামের স্কুল এবং সুন্দরবনের মতো দূরবর্তী ফ্রিল্যান্সিং কেন্দ্রে ইন্টারনেট সংযোগ দিতে সক্ষম করবে। আমরা চেষ্টা করছি, আশা করি সামনে ভালো খবর দিতে পারব।
বিটিআরসির মিডিয়া ও প্রকাশনা বিভাগের উপ-পরিচালক জাকির হোসেন খান জানান, তারা নন-জিওস্টেশনারি অরবিট স্যাটেলাইট সার্ভিস অপারেটর লাইসেন্স গাইডলাইন তৈরির কাজ করছে।
নেটওয়ার্ক ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ বলেন, গাইডলাইন অনুযায়ী দেশে স্টারলিংক মূলত ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের (আইএসপি) মতোই হবে। এতে পুরো দেশে যদি ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়, তবে স্যাটেলাইটে ইন্টারনেট দিয়েও কাজ হবে না।
স্টারলিংকের স্থানীয় ইন্টারনেট বাজারে সম্ভাব্য প্রভাব এখনও পুরোপুরি বোঝা যায়নি। একদিকে, এটি দূরবর্তী ও সেবা-অপ্রাপ্ত অঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেট সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেয়, যা শিক্ষাগত ও অর্থনৈতিক সুযোগ উন্মুক্ত করবে। অন্যদিকে, এর সেবার উচ্চ খরচ এবং সস্তা স্থানীয় প্রদানকারীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা দেশে স্টারলিংক কতটা টেকসই হব সে প্রশ্ন তুলছে।