খুলনায় জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত
মোঃ আলফাত হোসেনঃ খুলনায় ২৪শে এর জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে এক স্মরণসভা গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা কমিটির উদ্যোগে আজ ২৭অক্টোবর রবিবার সকাল পৌনে ১২টায় নগরীর উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরীর তৃতীয় তলায় ভাষাসৈনিক বেগম মাজেদা আলী সম্মিলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা আহবায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল এবং সঞ্চালনা করেন জেলা সদস্য আল আমিন শেখ। সভার শুরুতে মুক্তিসংগ্রামের সকল শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী জননেতা আবুল হাসান রুবেল, বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন র্জানৈতিক পরিষদ সদস্য জননেতা দেওয়ান আবদুর রশীদ নীলু। সভায় বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা যুগ্ম আহবায়ক মোঃ অলিয়ার রহমান শেখ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) খুলনা মহানগর সভাপতি খান লোকমান হাকিম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) খুলনা মহানগর কমিটির সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, নাগরিক ঐক্য খুলনা মহানগর সদস্য সচিব কাজী মোতাহার রহমান বাবু, বাংলাদেশ জাসদ খুলনা মহানগর সভাপতি রফিকুল হক খোকন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল খুলনা জেলা আহবায়ক এম,হুমায়ূন কবীর, ভাসানী অনুসারী পরিষদ খুলনা জেলা আহবায়ক শেখ আবদুল হালিম, গণসংহতি আন্দোলন সাতক্ষীরা জেলা সংগঠক সাংবাদিক মোঃ আলফাত হোসেন,খুলনা জেলা সদস্য টিপু সুলতান, নাদিরা খাতুন,খালিশপুর থানা আহবায়ক মোশারেফ হোসেন,অভয়নগর উপজেলা সংগঠক সামস সারফিন সামন, বাংলাদেশ লেখক শিবির খুলনা শাখার সাধারণ সম্পাদক বরকত আলী, খালিশপুর-দৌলতপুর জুটমিল যৌথ কারখানা কমিটির সভাপতি ও সিবিএ সাংগঠনিক সম্পাদক মনির হোসেন মনি, দৌলতপুর জুটমিল কারখানা কমিটির সভাপতি নূর মোহাম্মদ, সহ-সভাপতি মোঃ ডালিম কাজী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন, যশোর জেলা বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের আহবায়ক জান্নাতুল ফোয়ারা অন্তরা। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বাস্তব অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন যশোর জেলার শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফাতেমা অনন্যা, অভয়নগর উপজেলার শিক্ষার্থী ইয়াসিন তালুকদার, খুলনা নগরের শিক্ষার্থী আলভী শেখ, আসিফ মারুফ প্রমুখ। ২৪ এর জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধান আলোচক আবুল হাসান রুবেল বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার দ্বারা দেশ পরিচালিত হওয়ার কারণে বাংলাদেশ রাজনৈতিক-অর্থনৈতিকভাবে চরম সঙকটজনক অবস্থায় নিমজ্জিত ছিলো। একদলীয় শাসন চিরস্থায়ী কায়েম করার জন্য ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা মানুষের ভোটাধিকার হরণ,বাকস্বাধীনতা হরণ, আইনশৃ্খংলা পরিস্থিতির চরম অবনতি, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধগতি, শিক্ষা ধ্বংসের নীল-নকশা বাস্তবায়ন করে দেশকে এক চরম অন্ধকারে নিয়ে গেছে। বাংলাদেশে চলমান সঙ্কটজনক মুহূর্তে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলো ছাত্ররা, যে ঐক্যের সামনে ট্যাংক,হেলিকপ্টার দিয়ে ফ্যাসিস্টরা ন্যক্কারজনকভাবে গুলি করেছে, রাষ্ট্রের সকল বিশাল নিরাপত্তা বাহিনী রাজপথে উপস্থিত হয়েছিলো, কিন্তু ছাত্রদের দমাতে পারেনি। ছাত্রদের ওপর রাষ্ট্রের চরম অমানবিক নির্যাতনের ফলে অসংখ্য নারী শিক্ষার্থীরা স্রোতের মতো রাজপথে নেমে এসেছিলো। সংহতি জানাতে বিপুল সংখ্যক অভিভাবক-শ্রমিক-জনতা রাস্তায় নেমে আসে। এই যে অসাধারণ ঐক্য, এই ঐক্য আমাদের বজায় রাখতে হবে। যাতে ফ্যাসিবাদ আর কোনোভাবে মাথাচাড়া দিতে না পারে। যে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ কায়েম করে গেছে, সেটাকে যদি আমরা সত্যি সত্যি বদল করতে পারি। একটা নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় যেতে পারি। এজন্য রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর দরকার। রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার, আমাদের একটা গণতান্ত্রিক সংবিধান দরকার। তাই গণতন্ত্রের জন্য রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।