ট্রাম্প জিতলে রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনের পতন বাধ্য : কমলা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য বাকি আর মাত্র দুই সপ্তাহ। দুই প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রচারে ব্যস্ত। এর মধ্যেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে নতুন মামলা। কমলা হ্যারিস প্রচার করেছেন পেনসিলভানিয়া, উইসকন এবং মিশিগানে। তার সঙ্গে ছিলেন লিজ চেনি। লিজ হলেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির মেয়ে। বাবা, মেয়ে দুজনেই রিপাবলিকান নেতা, কিন্তু তারা প্রকাশ্যে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করেছেন।
রিপাবলিকানদের দিকে ঝুঁকে থাকা ভোট যাতে তার দিকে আসে, লিজকে নিয়ে সেই চেষ্টা করলেন হ্যারিস। ২০১৬ সালে তিনটি অঙ্গরাজ্যেই ট্রাম্প সেই সময়ের ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের থেকে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু ২০২০ সালে বাইডেন এই তিনটি রাজ্যে জিতেছিলেন। সেজন্যই হ্যারিস এই তিন সুইং স্টেটকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছেন। এই তিন রাজ্যে এগিয়ে থাকতে পারলে প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে এগিয়ে যাবেন হ্যারিস।
যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঙ্গরাজ্য আছে, যেখানে ডেমোক্র্যাটরা সাধারণত জেতে, কিছু রাজ্যে রিপাবলিকানরা। কিছু রাজ্য আছে, যা কখনও ডেমোক্র্যাট, কখনও রিপাবলিকান প্রার্থীরা জেতেন। সেগুলোকেই সুইং স্টেট বলা হয়। এই রাজ্যগুলোই ভোটের ফল নির্ধারণ করে।
চেনির সঙ্গে তিনটি টাউন হল ইভেন্ট করেছেন হ্যারিস। পেনসিলভানিয়ায় রক্ষণশীল রেডিও হোস্ট ম্যালবার্ন মডারেটর ছিলেন। হ্যারিস সেখানে ট্রাম্পের মানসিক স্থিতি এবং প্রেসিডেন্টের পদে বসার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
হ্যারিস বলেন, অনেক ভাবেই ট্রাম্প সিরিয়াস মানুষ নন। কিন্তু তিনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন, তাহলে তা গুরুতর হতে বাধ্য। তিনি বলেছেন, ট্রাম্প যদি নভেম্বরের নির্বাচনে জেতেন, তাহলে রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনের পতন হতে বাধ্য। পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গে চেনিও বহুবার ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন।
চেনি মিশিগানের ইভেন্টে বলেছেন, তিনি অনেক রিপাবলিকানের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারাও ট্রাম্পকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, কী কথা হয়েছে, তা তিনি প্রকাশ্যে জানাতে পারবেন না। তবে তারা যে ঠিক কাজটা করবেন, তা নিয়ে চেনির মনে কোনো সংশয় নেই।
চেনি বলেছেন, আমি শুধু এটা মনে করিয়ে দিতে চাই, যদি আপনারা উদ্বিগ্ন হন, তাহলে আপনারা নিজেদের বিবেক অনুযায়ী ভোট দিন। কাউকে কিছু বলার দরকার নেই।
সোমবার ট্রাম্প জানিয়েছেন, চেনি হলেন যুদ্ধবাজ। তিনি হ্যারিসের ইভেন্টে চেনির যাওয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না, তা বুঝিয়ে দেন। তিনি অভিযোগ করেন, আফগানিস্তান ও ইরাকের যুদ্ধে তার ভূমিকার জন্য ডিক চেনিকে মানুষ চেনে। তিনি সব মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাইতেন। তিনিই মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের জন্য বুশকে বাধ্য করেছেন।
ট্রাম্প গত মাসে বিতর্কের সময় সেন্ট্রাল পার্কে ১৯৮৯ সালের একটি হত্যা নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন। এই অভিযুক্তদের বলা হয় সেন্ট্রাল পার্ক ফাইভ। প্রথমে তাদের পাঁচ থেকে ১৩ বছরের জেল হয়। তবে আরেকজনের সাক্ষ্য ও ডিএনএ তথ্যের ভিত্তিতে তারা ছাড়া পায়।
ট্রাম্প প্রচারে বলেছিলেন, তারা একজনকে খুন করেছিল এবং দোষ স্বীকারও করেছিল।
তদন্তের প্রথম দিকে পাঁচ কিশোর অপরাধ স্বীকার করে। তারপরই তারা জানায়, তারা চাপের মুখে এই কথা বলেছিল এবং বিচারের সময় তারা বলে, তারা নির্দোষ। এই বিষয়টি নিয়েই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হয়েছে। ট্রাম্পের প্রচারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আরেকটি অসার মামলা করা হয়েছে।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে