৫ আগস্টে রক্তের দাগ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশের মানুষ
নিজস্ব প্রতিনিধি : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে চলতি বছরের ৫ আগষ্টে রক্তের দাগ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশের মানুষ।দেশের মানুষের চাপা ক্ষোভের বিস্ফোরণের কারণে গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গণভবন থেকে দুপুর আড়াইটায় সেনা হেলিকপ্টারযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়।সেদিন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকারুজ্জামান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ প্রদান করেন।এরপর সারাদেশে ছাত্র-জনতা বিজয় মিছিল নিয়ে আনন্দ উল্লাস ফেটে পড়ে।সেদিন দেশব্যাপী মানুষের চাপা ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে।উত্তেজিত ছাত্র-জনতা দেশব্যাপী জ্বালাও পোড়াও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, আওয়ামী লীগের অফিস, থানা, ট্রাফিক অফিস, ফাঁড়ি, জেলখানা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। দেশের বিভিন্ন জেলখানা থেকে আসামি পালানোর ঘটনা ঘটে সেদিন। অস্ত্রগার ভেঙ্গে লুট হয় অস্ত্র ও গুলাবারুদ। এই সুযোগে কিছু সুযোগ সন্ধানী দুর্বৃত্ত ও সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লুটপাট ও লুটতরাজ করে দিদারচ্ছে।গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র ও উত্তেজিত জনতা সেদিন প্রথমে সাতক্ষীরা জেলায় বিকাল ৩ টায় জেলা পুলিশ সুপারের বাসভবনে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে পুঁজি করে পরিকল্পিতভাবে জেলার একটি সন্ত্রাসী বাহিনী ও দুর্বৃত্তরা ট্রাক ও পিকআপ যোগে শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে অগ্নিসংযোগ ও হামলা চালায় আওয়ামী নেতাকর্মী ও সমর্থনদের বাড়িতে বাড়িতে।এসময় জেলা আওয়ামী লীগের অফিস, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে উত্তেজিত জনতা। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে,শহরের পোস্ট অফিস মোড়স্থ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে, ইটাগাছা হাটের মোড়ে সংরক্ষিত মহিলা এমপি লায়লা পারভীন সেঁজুতি এমপি ‘র অফিস এবং তার ব্যবহারিত একটি মাইক্রোবাস শহরের বাইপাস এলাকায় নিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, দৈনিক কালের চিত্র অফিসে, খুলনা রোড মোড়ে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে, সিটি কলেজের সামনে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে, সাবেক যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নানের বাড়িতে, পুরাতন সাতক্ষীরা ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের অফিসে, সাতক্ষীরা সুলতানপুর বড়বাজার মাছ বাজার এলাকায় শরিফুল ইসলাম খান বাবুর অফিস, বঙ্গবন্ধুর সৈনিক লীগের অফিসে, শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক এলাকায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার, রসুলপুর গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদের বাড়ি ভাংচুর, ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের অফিস ও পৌর কাউন্সিলর শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন কালু’র অফিস, পুলিশ সুপারের বাসভবন,থানা, ট্রাফিক অফিস,পুলিশ ফাঁড়ি, জেলখানা সহ জেলা ব্যাপী প্রায় সাড়ে চার হাজার বিভিন্ন স্থাপনা অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। উত্তেজিত জনতার হামলায় অসংখ্য মানুষ আহত হন এবং প্রাণ হারায়।এই আন্দোলন গত ১৬ বছরের লড়াইয়ের একটি মুহূর্ত ৫ আগস্ট পেয়েছে বাংলাদেশের মানুষ বলে মনে করেন ছাত্র-জনতা।