পশ্চিমবঙ্গে ধর্ষণবিরোধী বিল পাস, সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ধর্ষণবিরোধী ‘অপরাজিতা’ বিল পাস হয়েছে। এতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখেছে রাজ্যটির সরকার।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন সরকারের তোলা ধর্ষণবিরোধী বিলটি সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এর মধ্যদিয়ে ধর্ষণ, দলবেঁধে ধর্ষণ এবং শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধসংক্রান্ত কেন্দ্রীয় আইনে প্রথম কোন সংশোধন আনলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বিলটি এখন রাজ্যের গভর্নর সিভি আনন্দ বোসের কাছে যাবে এবং তারপর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে পাঠানো হবে।
‘অপরাজিতা’ বিলটিকে ঐতিহাসিক এবং মডেল হিসেবে অভিহিত করে এর মাধ্যমে কলকাতার আর জি কর সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার ৩১ বছর বয়সী নারী চিকিৎসকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৯ আগস্ট হাসপাতালের সেমিনার রুমে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ওই নারী চিকিৎসক।
‘অপরাজিতা নারী ও শিশু (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন ও সংশোধন) ২০২৪’ শীর্ষক বিলটিতে ধর্ষণের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। যদি ধর্ষণ ও যৌন অপরাধের ফলে কোন ভুক্তভোগীর মৃত্যু হয়, তাহলে নতুন আইন অনুযায়ী ধর্ষণকারী ও যৌন নিপীড়নকারীর মৃত্যুদণ্ড হবে।
এছাড়াও নতুন বিলে ধর্ষণের জন্য দোষী সাব্যস্তদের প্যারোল ছাড়াই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
এদিকে, মমতার বিরোধী দল বিজেপিও এই বিলটিকে স্বাগত জানিয়েছে।
এর আগে, বিলটি উত্থাপনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্যের গভর্নর সিভি আনন্দ বোসকে বিলটিতে সম্মতি দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই বিলের মাধ্যমে, আমরা কেন্দ্রীয় আইনে বিদ্যমান ফাঁকফোকরগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করেছি। ধর্ষণ মানবতার বিরুদ্ধে একটি অভিশাপ, এই ধরনের অপরাধ বন্ধ করতে সামাজিক সংস্কার প্রয়োজন।’
মমতা আরো বলেন, ‘বিরোধীদের উচিত রাজ্যপালকে বিলে সই করতে বলা। তারপর বিলটিকে কার্যকর করার দায়িত্ব আমাদের। আমরা সিবিআইয়ের কাছে কলকাতার চিকিৎসক হত্যার বিচার চাই, দোষীদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু চাই।’