সাতক্ষীরায় সাবেক সাংসদ রবি ও পুলিশ সুপার মোস্তাফিজসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা
নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ ৪ বছর আগে সাতক্ষীরার সদর উপজেলার মাটিয়াডাঙ্গায় বিএনপি কর্মী জাকির হোসেনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে এবার জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সাবেক পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, তৎকালিন সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মুস্তাফিজুর রহমান, তৎকালিন ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মহিদুল ইসলামসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরার আমলি আদালত-১ এ মামলাটি দায়ের করেন সদর উপজেলার মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত কেরামত গাজীর ছেলে ও নিহতের ভাই আবুল কাশেম গাজী। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন বড়াল মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ মামলার এজাহার নামীয় অন্যান্য আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালীন এসআই হাসানুর রহমান, কনস্টেবল আনোয়ার হোসেন, সদর উপজেলার ব্র²রাজপুর গ্রামের মনিরুজ্জামান তুহিন, জাহানাবাজ গ্রামের আব্দুর রশিদ, জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি সাইফুল করিম সাবু, মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের মোক্তার হোসেন, জেয়ালা গ্রামের আব্দুস ছালাম সানা, দহাকুলা গ্রামের মাসুদ রানা ওরফে কোপা মাসুদ, ধুলিহর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজান চৌধুরি, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আসাদুজ্জামান বাবু, ঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান মোশা এবং ধুলিহর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাবু সানা।মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের পহেলা জানুয়ারী সদর উপজেলার মাটিয়াডাঙ্গা বাজারে জনৈক বিপ্লবের চায়ের দোকানে বিকাল ৫ টার দিকে বিএনপি কর্মী জাকির হোসেন তার বন্ধুদের সাথে কেরামবোর্ড খেলার সময় সকল আসামীদের পারস্পরিক সহযোগিতায় এসআই হাসানুর ও কনস্টেবল আনোয়ারসহ আরো ২/৩ জন কনস্টেবল তাকে পিঠমোড়া দিয়ে বেঁধে দুই হাতে হ্যান্ডক্যাপ লাগিয়ে সমস্ত শরীরে ব্যাপক মারপিট ও জখম করে সেখান থেকে মোটরসাইকেল যোগে অপহরন করে সাতক্ষীরা অভিমুখে নিয়ে আসে। এরপর এ মামলার বাদী আবুল কাশেম তার ছোট ভাই অপহৃত জাকিরকে সদর থানা ও ডিবি অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়ে তাকে কোথাও সন্ধান পাননি। একপর্যায়ে ঘটনার দুই দিন পর ৩ জানুয়ারী রাত তিনটার দিকে দামারপোতা ওয়াপদা বেঁড়িবাধের নীচে বেতনা নদীর চরে সকল আসামীদের প্রকাশ্য ইন্ধনে তার হাত পা ও চোখ বেঁধে দুই রাউন্ড গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ তার পরিবারেরর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বাদী পক্ষের আইনজীবি এড, কামরুজ্জামান ভুট্টো বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ওই সময়কার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা সম্ভব না হওয়ায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তণ হওয়ায় মামলাটি দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে। তিনি এসময় বিচারবহির্ভুত হত্যাকান্ডে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।