কমছে পানি মিলছে মরদেহ, এক জেলায় ১৭ জনের মৃত্যু
ডেস্ক নিউজ:
ফেনীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় জেলার ৬টি উপজেলা প্লাবিত হয়ে ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। অনেকেই জোয়ারের পানিতে ভেসে যান। তবে মৃত্যুর সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি তখন। এরমধ্যে পানি কমে যাওয়ায় পাওয়া যাচ্ছে অনেকের গলিত মরদেহ।
বুধবার (২৮ আগস্ট) রাতে পুলিশের বরাত দিয়ে ফেনী জেলা প্রশাসন সূত্রে মৃতের সংখ্যা এ পর্যন্ত ১৭ জন বলে জানান।
এরমধ্যে মঙ্গলবার ফেনী সদর উপজেলার লালপুল এলাকায় অজ্ঞাত পুরুষ (৩৩) ও অজ্ঞাত পুরুষের (৪৫) মরদেহ পাওয়া যায়। এছাড়া ছাগলনাইয়া উপজেলায় অজ্ঞাতনামা মহিলা (৩৮), পরশুরাম উপজেলার ধনিকুন্ডা এলাকার আমির হোসেনের ছেলে সাহাব উদ্দিন (৭০), মির্জানগর ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেন (৫০) ও ফুলগাজী উপজেলার নোয়াপুরের হাবিবের স্ত্রী শাকিলা (২২), উত্তর করইয়ার বেলালের ছেলে কিরন (২০), দক্ষিণ শ্রীপুরের মিজানুর রহমানের ছেলে রাজু (২০), কিসমত বাসুড়ার রহিম বাদশার ছেলে আবুল খায়ের (৫০), জি.এম.হাট ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুরের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ তারেক (৩২), শনিরহাটের নুর ইসলামের কন্যা রজবের নেছা (২৫) ও সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের সমপুরের গ্রামের মাবুল হকের ছেলে নাঈম উদ্দিন (২৮), অজ্ঞাতনামা পুরুষ (৩৮), (হিন্দু) অজ্ঞাতনামা মহিলা (৩৮), ছাড়াইতকান্দির শেখ ফরিদের ছেলে আবির (৩) এবং দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর করিমপুর গ্রামের নুর নবীর ছেলে নূর মোহাম্মদ মিরাজ (৮ মাস) ও জয়লস্কর ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের হুমায়ুন কবিরের ছেলে জাফর ইসলাম (৭)।
প্রসঙ্গত, গত ২০ অগাস্ট দুপুর থেকে ফেনীতে বন্যা শুরু হয়। পরদিন ২১ অগাস্ট দুপুর থেকে তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। জেলার পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলা শুরুতে বন্যাকবলিত হলেও যা পরে ফেনী সদর, সোনাগাজী ও দাগনভূঞা ছড়িয়ে পড়ে।
এরমধ্যে ২৪ আগস্ট রাতে ফেনী শহরের মিজান রোডে সোনালী ব্যাংকের সামনে হাঁটু পানিতে একটি মরদেহ ভেলায় ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে সেখানে লোকজন ভিড় জমান। পরে কয়েকজন মানুষ সেই লাশটির জানাজা ও দাফনের জন্য নিয়ে যায়। পরদিন রোববার (২৫ আগস্ট) ফেনী সদর উপজেলার লালপোল এলাকার উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামে বন্যায় ভেসে আসে এক শিশুর লাশ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবারে বন্যায় ফেনীতে ১০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দেড় লাখ মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ও বাকিরা বিভিন্ন উপজেলায় উঁচু ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, বন্যায় নিহতদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে। নিহতদের পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। এ বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম চলমান।