জামায়াত কর্মী শহীদুল ইসলাম হত্যা সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর ও সাবেক সাংসদ প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩২ জনের নামে মামলা
রঘুনাথ খাঁঃ ২০১৫ সালের ৬ ফেব্রæয়ারি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের মৃত নূরালী সানার ছেলে জামায়াতকর্মী শহিদুল ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যার অভিযোগে তৎকালিন জেলা পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ প্রকৌশলী শেখ মুজিবর রহমান, সদর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামানসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের ভাই মোঃ ইমাদুল হক বাদি হয়ে সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক নয়ন বড়াল মামলাটি তদন্ত করে এফআইআর হিসেবে গণ্য করার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।মামলার অন্য আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরার সদর থানার সাবেক ওসি এনামুল হক, যশোর কোতোয়ালি থানার তৎকালিন উপপরিদর্শক স্বপন কুমার দাশ, কনস্টেবল রথিম চন্দ্র শারমা, শাহমুদ শারমা, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান, তার ভাই আব্দুল হান্নান, চাচাত ভাই রবিউল ইসলাম, কাশেমপুরের অহিদুল ইসলাম, ইটাগাছার শেখ শাহাঙ্গীর হোসেন শাহীন, কাশেপুরের হাসানুজ্জামান শাওন, শেখ আনোয়ার হোসেন, শিকড়ির আক্তারুল ইসলাম, শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সভাপতি শওকত আলী, বৈকারীর সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামন অসলেসহ মোট ৩২ জন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৬ ফেব্রæয়ারি রাত ৮টার দিকে পুলিশ কর্মকর্তাসহ সকল আসামীরা তিনটি কালো মাইক্রোবাসে এসে বাদির ভাই শহিদুল ইসলামের বাড়িতে আসে। তারপর শহীদুলকে টানা হেঁচড়া করে মাইক্রোবাসে করে তুলে সদর থানায় নিয়ে যায়। গভীর রাতে তাকে চোঁখ বেঁধে যশোর জেলার কোতোয়ালী মডেল থানাধীন পিকনিক কর্ণারের সামনে নিয়ে যায়। সেখানে চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর ও কাজী মনিরুজ্জামনের নির্দেশে সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হকসহ চার পুলিশ সদস্য শহীদুলের বুক , পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি করে হত্যা করে ক্রসফায়ারে মৃত্যুর নাটক সাজায়। পরে লাশ পিকনিক কর্ণারের ফাঁকাস্থানে ফেলে রেখে চলে যায়। পরদিন সকালে খবর পেয়ে শহীদুলের লাশ সনাক্ত করে স্বজনরা। লাশ যশোহর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি অপমৃত্য মামলা করা হয়। সাতক্ষীরা সদর থানায় গেলে মামলা নেয়নি পুলিশ।ওই সময়কার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করা সম্ভব না হওয়ায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তণ হওয়ায় মামলার বিলম্বের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাড. আকবর হোসেন জানান, ৬জন পুলিশ সদস্যসহ ৩২জনের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত মামলাটি বুধবার এফআইআর হিসেবে গণ্য করার নির্দেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।