দরগাহপুর কলেজিয়েট স্কুলে হ-য-ব-র-ল অবস্থা
আশাশুনি প্রতিনিধিঃ আশাশুনি উপজেলার গুণীজন পল্লী হিসাবে এক সময়ের সুপরিচিত দরগাহপুর গ্রামে অবস্থিত দরগাহপুর শ্রীধরপুর খাসবাগান রামনগর হোসেনপুর (এসকেআরএইচ) কলেজিয়েট স্কুলের পরিবেশ আবারও শিক্ষাদানের প্রতিকূলে অবস্থান নিয়েছে। ফলে নিয়মিত ক্লাশ পরিচালনা, শৃংখলা বজায় রাখা ও অফিস পরিচালনায় কালোমেঘের ঘনঘটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির সুনাম সুখ্যাতি অনেক দূর গড়িয়েছিল। সাবেক অধ্যক্ষ প্রয়াত আবুল কাশেম দায়িত্ব পালনকালে প্রতিষ্ঠানের শনৈঃ শনৈঃ উন্নতি নজরে এসেছিল। প্রতিষ্ঠানটিতে এলাকার বাইরের শিক্ষার্থীদের আগমন বেশ বেড়ে গিয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর পর বেশ কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দায়িত্ব পালন করেন। তিনিও পূর্বের অবস্থা ধরে রাখতে চেষ্টায় কার্পণ্য করেননি। গভর্ণিং বডিও প্রতিষ্ঠানের শুরু থেকে দরদদিয়ে দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। এক পর্যায়ে জুলফিকর আলী গাজী অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন। কিছুদিনের মধ্যে অন্তঃকলহ ও অভিভাবক-সচেতন মানুষের সাথে নানান দ্বন্দ্বের বহিঃ প্রকাশ ঘটতে থাকে। শিক্ষকদের মধ্যেও বিভাজন শুরু হয়। বিষয়টি আইন আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এবং মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক তাকে বরখাস্ত করা হয়। এসব ছিল বেশ আগের ঘটনা। এরপর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব প্রাপ্ত হন শিক্ষক গৌরপদ মন্ডল। সামান্য কিছু সমস্যা থাকলেও ভালভাবে চলে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু সম্প্রতি আবার দেখাদিয়েছে দুর্গতি, দুঃসংবাদ ও বিশৃংখলা। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত ২ আগষ্ট হতে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ছুটি নিয়ে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত আছেন। গত ৬ আগস্ট স্কুল এন্ড কলেজ খোলা হয়। ৬, ৭ ও ৮ আগস্ট শিক্ষকরা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। ১১ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট খাতা বাইরে না থাকায় কলেজ সেকশানের শিক্ষকরা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে পারেননি বলে শিক্ষকরা জানান। স্কুল শাখার ন্যায় কলেজ শাখাও যথারীতি পরিচালিত হলেও শিক্ষার্থীদের অনীহা লক্ষ্য করা গেছে। অধ্যক্ষ না থাকায় নবীণ বরণ অনুষ্ঠান এখনো করা সম্ভব হয়নি। নানাবিধ পরিবেশ এর প্রকাশ্য রূপ দেখা যায় ২৮ আগস্ট বুধবার। একাধিক সূত্রে জানাগেছে, এদিন কলেজ শাখার বাঁকা এলাকার শিক্ষার্থীদের সাথে দরগাহপুর এলাকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাদানুবাদ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কয়েকজন ছাত্র আহত হয়েছে বলে জানাগেছে। সেনা বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
একই সূত্রে জানাগেছে, অপরদিকে মহামান্য হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ান মামলায় বরখাস্ত হওয়া সাবেক অধ্যক্ষ জুলফিকর আলী গাজী গত ১১ আগস্ট প্রতিষ্ঠানে আকস্মিক ভাবে উপস্থিত হয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কার্যালয় তালাবদ্ধ থাকায় তিনি শিক্ষকদের সাথে বসে সময় কাটাচ্ছেন। তার আগমনের ফলে প্রতিষ্ঠানে নতুন আলোচনার উদ্ভব হয়েছে। সবমিলে প্রতিষ্ঠানটিতে নানা ঘটনা, দুর্ঘটনা ও কার্যক্রম দেখা দেওয়ায় কেমন যেন হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতির পূর্বাভাস আছড়ে পড়তে চাইছে। সংশ্লিষ্টরা ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ প্রতিষ্ঠানের সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।