এমপক্স রোগের সংক্রমণ এড়াতে করণীয় ও যা জানা উচিত

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ডেস্ক:

সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমপক্স রোগের পার্দুভাব বাড়ছে। আফ্রিকার কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়া এমপক্স নিয়ে উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। একসময় মাঙ্কিপক্স নামে পরিচিত উচ্চ সংক্রামক এই রোগের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাবে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে মারা গেছেন অন্তত সাড়ে চার শ মানুষ।

ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রোগের সংক্রমণ বা বিস্তার রোধ করে দিতে হলে ভাইরাসটির মিউটেশন বা ছড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। তাহলেই এমপক্স করোনার মতো মারাত্মক আকার নেয়ার সুযোগ পাবে না। তাই এমপক্স থেকে বাঁচার উপায় জানার আগে আসুন জেনে নিই, এ রোগ একজন থেকে অন্যজনের মধ্যে ছড়ানোর প্রক্রিয়াটি।

করোনার মতো এমপক্স ভাইরাসও বিশ্বে মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন উদ্বেগ প্রকাশ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

এমপক্স রোগ ছড়ানোর প্রক্রিয়া

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমপক্স ভাইরাসটি একই সঙ্গে সংক্রামক ও ছোঁয়াচে রোগ। ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে যেভাবে ছড়িয়ে পড়ে তাহলো-

১. আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে কথা বলার সময় তার শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে।

২. আক্রান্ত রোগীর ত্বকের সংস্পর্শে।

৩. আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা জিনিস ব্যবহার করলে।

৪. আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়া খাবার খেলে।

৫. আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ালে।

এমপক্স থেকে বাঁচার উপায়

এমপক্স রোগ ছড়ানোর প্রক্রিয়া জানা থাকলে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে সহজেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। সংক্রমণ এড়াতে অবশ্যই কিছু বিষয় মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এগুলো হলো-

১. বায়ু দূষণ ও বাতাসে এমপক্স ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে নিয়মিত মাস্ক ও চশমা ব্যবহার করুন।

২. অপরিষ্কার হাতে মাস্ক, ত্বক ও চোখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।

৩. নিয়মিত হাত পরিষ্কার রাখতে সাবান, পানি অথবা স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।

৪. এমপক্সে আক্রান্ত এমন ব্যক্তিকে বাড়িতে আইসোলেট (পরিবারের অন্য সদস্য থেকে দূরে রাখতে আলাদা একটি ঘরে) রাখুন।

৫. আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা জিনিস আলাদা করে দিন। রোগীর খাওয়া খাবার খেতে বিরত থাকুন। শারীরিক সম্পর্ক থেকেও বিরত থাকুন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, নিজে সুরক্ষিত থাকতে এমপক্স আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হলেও তার থেকে অন্তত ৩ মাস শারীরিক দূরত্ব রাখা জরুরি।

৬. এমপক্স ভাইরাসে আক্রান্ত এমন ব্যক্তির সঙ্গে দূর থেকে কথা বললেও বাতাসের মাধ্যমে আপনার আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই এমপক্স রোগী থেকে দূরে রাখুন।

৭. এমপক্স রোগীর চিকিৎসকদের তাই পারসোনাল প্রটেক্টিভ ইক্যুপমেন্ট বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। প্রয়োজনে সেফটি প্রটোকল মেনে চলতে হবে।

৮. রোগী আপন রোগ নয়, এ বার্তা আশপাশের মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিন। পাশাপাশি এমপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাড়িতে আইসোলেট রাখার পরামর্শ দিন। দ্রুত চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে বলুন।

৯. আক্রান্ত ব্যক্তিসহ সবাই এমপক্স প্রতিরোধে যেখানে সেখানে থুথু, কফ ফেলা থেকে বিরত থাকুন। কাশি কিংবা হাঁচি দেওয়ার সময় রুমাল ব্যবহার করুন। টিস্যু ব্যবহার করলে ঢাকনাযুক্ত ময়লার ঝুড়িতে ব্যবহার করা টিস্যু ফেলুন।

১০. বাড়িতে পোষা প্রাণী থাকলে তা থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন।

১১. বাইরের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। বাড়িতে যেকোনো খাবার তৈরি করলে আগুনের তাপে ভালো করে তা রান্না করুন।

১২. ভাইরাস সম্পর্কে শিশুরা অবগত না হওয়ার কারণে এমপক্সে আক্রান্তের ঝুঁকিতে শিশুরাই বেশি রয়েছে। তাই পরিবারে শিশুদের যত্নে বিশেষ গুরুত্ব দিন। পাশাপাশি ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)