ফ্রান্সে ডানপন্থীদের উত্থানে আতঙ্কে মুসলমানরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফ্রান্সে মারিন লে পেনের কট্টর ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র্যালির (আরএন)-এর পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রথম ধাপের ভোটে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের পর মুসলমানদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকেই নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। ২২ বছর বয়সী ফাতিমাতা বলেন, আমার মনে হচ্ছে ফরাসি জনগণ আমার সঙ্গে বেইমানি করছে। ফাতিমাতা হিজাব পরে করেন এবং মৌরিতানীয় ও সেনেগালীয় অভিবাসী বাবা-মায়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেছেন।
লে পেনের দল ফ্রান্সের অভিবাসী সম্প্রদায়কে প্রায় সময় আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়ে আসছে। তিনি প্যারিসের উপকণ্ঠের দরিদ্র অঞ্চলগুলোতে বড় হয়েছেন। অঞ্চলটিতে অভিবাসী ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস।
লে পেন জনসমক্ষে হিজাব নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। ফ্রান্সের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লে পেনের উত্তরসূরি জর্ডান বারডেলা এগিয়ে রয়েছেন। তিনি বলেছেন, পর্দা একটি বৈষম্যের হাতিয়ার। প্যারিসের উত্তরাঞ্চলের জনবহুল ব্যানলিউকের ‘ইসলামিকরণ’-এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন এবং তার দল ক্ষমতা পেলে দ্বৈত নাগরিকদের কিছু ‘কৌশলগত’ রাষ্ট্রীয় কাজে নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
২৫ বছর বয়সী ইলিয়াস বলেন, ন্যাশনাল র্যালি ক্ষমতায় এলে অনেক মুসলিম ফ্রান্স ছাড়ার কথা ভাবছেন। তবে আমরা যদি সবাই চলে যাই, কে প্রতিরোধ করবে?
আলজেরিয়ান বংশোদ্ভূত ছাত্র তিজিরি মেসাউডেন ন্যাশনাল র্যালির নীতির কারণে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। তিনি বলেন, দ্বৈত নাগরিকদের কৌশলগত পদে চাকরি না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি আমার পড়াশোনার কোনো দামই রাখবে না।
রোববার প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণের পর ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার ফলাফল ঘোষণা করে। ন্যাশনাল র্যালি পেয়েছে ৩৩ শতাংশ ভোট, বামপন্থী নিউ পপুলার ফ্রন্ট পেয়েছে ২৮ শতাংশ, আর ম্যাক্রোঁর এনসেম্বল অ্যালায়েন্স পেয়েছে ২০ শতাংশ। ন্যাশনাল র্যালি দলটি অভিবাসনবিরোধী ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমালোচক হিসেবে পরিচিত। দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন মেরিন লে পেনের শিষ্য জর্দান বারদেলা।
ফ্রান্সের পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ৫৭৭ আসনের মধ্যে ২৮৯ আসন প্রয়োজন। দ্বিতীয় ধাপের ভোট হবে ৭ জুলাই। ন্যাশনাল র্যালির সরকার গঠন ঠেকাতে ম্যাক্রোঁকে অন্যান্য দলের সঙ্গে জোট গঠনের চেষ্টা করছেন।