বিয়ে পাগল রেজাউলের কান্ড
নিজস্ব প্রতিনিধি:অন্যের স্ত্রীকে ভাগিয়ে বিয়ে করা স্ত্রী মারা যাওয়ার পর হিজলা বিয়ে করা,তাকে তালাক দিয়ে, সর্বশেষ অন্ত:স্বত্তা স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আলোচনায় এসেছেন একাধিক বিয়ের হোতা ও প্রতারক জামায়াতের অর্থযোগানদাতা রেজাউল ইসলাম। শুধু বিয়ে করে ক্ষ্যান্ত হয়নি সুকৌশলে প্রথম স্ত্রীকে দিয়ে শ^াশুড়ির কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকার জমি। সর্বশেষ শ^াশুড়ির নামে ১শতক ৭৫ পয়েন্ট জমি হাতিয়ে নিয়ে শাশুড়িকে তার খেতে না দিয়ে এক প্রকার বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।
মুনজিত গ্রামের মৃত আ্ব্দুল মজিদের ছেলে শফিকুল ইসলাম জানান, মুনজিতপুর গ্রামের মৃত বরকতউল্লাহর সাত মেয়ে। তার কোন ছেলে সন্তন নেই। মুনজিতপুর একবারে শহরের উপরে তাদের বাসা। মৃতের আগে তিনি মেয়েদের বিয়ে দিয়ে যান। ছোট মেয়ে রওশনারা খাতুনের বিয়ে হয় শহরের সাগর হোটেলের সামনে ময়না বাবুর্চির সাথে।তার হোটেল ব্যাবসা ছিল। রেজাউল সেই হোটেলে বয় হিসেবে কাজ করতো। হোটেল বাসা এক সাথে হওয়ার কারনে রেজাউল বাসায় অবাধ যাতোয়াত করতো। যাতোয়াতের সুবাধে রওশনারার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। রওশনারার সে ঘরে আঞ্জুয়ারা খাতুন নামে একটি শিশু মেয়েকে ফেলে রেখে লম্পট রেজাউল ভাগিয়ে এনে বিয়ে করে। বিয়ে করার পর সে ঘর জামাই হিসেবে সেখানে থাকতে শুরু করে। রওশনারা দিয়ে সে তার মাকে ভুল বুঝিয়ে অন্য মেয়েদের বি ত করে নিজের নামে মেইন রাস্তার সাতে ৫ কাঠাঁ জমি লিখে নেয়। সে তার শ^শুড়িকে ভুল বুঝিয়ে তাকে দেখভাল করার কথা বলে উক্ত সম্পত্তি লিখে নেয়। সর্বশেষ শাশুড়ি মর্জিনা খাতুনের এক শতক ৭৫ পয়েন্ট জমি লিখে নিয়ে শাশুড়িকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। বৃদ্ধ বয়সে তার জায়গা হয়েছে অন্য জায়গায়। রেজাউল শাশুড়ির জায়গায় আলিশান হোটেল করে দেদারছে ব্যাবসা করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় শাশুড়ি মর্জিনা খাতুনের মেয়ে রওশনারা মারা যাওয়ার পর একই বাড়িতে লম্পট রেজাউল তিনটি বিয়ে করেছে।
মুনজিতপুর গ্রামের বাসিন্দা আতিয়ার হোসেন জানান, রেজাউলের আদি বাড়ি শ্যামনগর উপজেলায়। ছোট বেলায় সাতক্ষীরায় এসে বড় বাজারে ইদ্রিস মিয়ার দোকানে মুটি গিরি করতো। এরপর বিভিন্ন হোটেলে মেচিয়ারি করতো। এরপর পাঁকাপুলের হোটেলের নিচে অবৈধভাবে হোটেল ব্যাবসা শুরু করে। এতে শেল্টার দিতো এক প্রভাবশালি সাংবাদিক। পৌরসভা ও প্রশাসনের লোক গেলে উক্ত সাংবাদিক এসে সামনে এসে দাড়িয়ে মিমাংসা করতো। হোটেল করার পর সুচতুর রেজাউলের আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সেই সময় সাতক্ষীরায় জামায়াতের একক আধিপত্য ছিল। রেজাউল জামায়াতের রাজনীতি জড়িয়ে পড়ে। সে জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা হিসেবে বলিষ্ঠ ভুমিকা রাখে। এখনও সে জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত।
রেজাউলের তৃতীয় স্ত্রী রেবেকা খাতুন জানান, রেজাউলের সাতে আমার ১৯/২/২০২১ সালে বিয়ে হয়। তার বাবা ভ্যানচালক গরীব মানুষ। তারা এ বিয়েতে রাজি হয়নি। কিন্তু তার প্রথম স্ত্রীর সন্তানের আমাদের বাড়িতে এসে কোন রকম সমস্যা হবে না বলে আমাকে রাজি করিয়ে বিয়ে দেয়। তার প্রথম স্ত্রী ছেলে মেয়ে আমার বিয়ের স্বাক্ষী। বিয়ের কিছু দিন পর তার আসল রুপ আমি দেখতে পাই। আমি জানতে পারি তার প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সে আমাকে না আামার আগে কলারোয়া উপজেলায় এক হিজলা মেয়েকে বিয়ে করে। কিছু দিন পর থাকেও সে তালাক দেয়। তার সাথে বিভিন্ন মহিলার অনৈতিক সম্পর্ক আছে। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে মাঝে মাছে বাক বিতন্ডা হতো। সে একটা লেভাস ধারী শয়তান। পরনারি আসক্ত। মাঝে আমি অসুস্থ্য হয়ে গেলে ডাক্তার লিপিকা বিশ^াসের শরনাপন্ন হই। তিনি আমাকে কিছু টেস্ট করাতে বলেন। আমি টেস্টগুলো নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেন আপনি প্রেগনেন্ট। আমি খুশিতে বাড়িতে এসে আমার স্বামীকে বললে তিনি বলেন বচ্চা নষ্ট করতে হবে। বাচ্চা নেওয়া যাবে না। আমি তাকে বারবার বলি মাতৃত্বের স্বাদ সব নারি পেতে চায়। আমার স্বামী ও তার প্রথম ঘরের ছেলে মেয়ে ও শিউলি নামে এক মহিলাকে দিয়ে আমাকে নানান ভাবে হুমকি দিতে থাকে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য। এ নিয়ে তার আামাকে ব্যাপক মারধর করে। আমি ভয়ে নিরুপায় হয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসি। পরবর্তীতে শুনি সে আমাকে তালাক দিয়েছে। আমি এখন কি করবো বুঝতে পারছিন। আমার পিতা ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে।
রেবেকা খাতুন আরও বলেন, আমার স্বামীর রাজ হোটেলের নিচে সাইফুলের একটি চায়ের দোকান করে দিয়েছিল। আমার স্বামীর সাথে সাইফুলের স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক আছে। সে দিন নেই রাত নেই সেখানে যেয়ে রাত যাপন করে। এনিয়ে আমাদের মধ্যে মাঝে মাঝে ঝগড়া হতো। সাইফুল মনের কষ্টে প্রায় দেড় বছর নিরুদ্দেশ। তিনি বলেন আমার স্বামী ও সাইফুলের স্ত্রী মিলে সাইফুলকে গুম করে হত্যা করেছে।সাইফুলের স্ত্রী শিউলি খাতুনের কারনে আমার সংসার ভেঙ্গে যায় বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন , আমার স্বামী রেজাউলের সাথে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের যোগাযোগ আছে। তারা গভীর রাতে আমাদের বাসায় আসতো। আমার স্বামী তাদের টাকা পয়সা দিতো। আমি বারন করলে আমাকে মারধর করতো।অসহায় রেবেকা খাতুন জেলা প্রশাসক জেলা পুলিশ সুপারসহ উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
একই কথা বলেছেন নিখোজ সাইফুলের ভাই মুনজিতপুরের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম, তিনি বলেন, তার ভাইকে গুম করা হয়েছে। রাজ হোটেলের মালিক রেজাউল ইসলাম ও আমার ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক আছে। যে কারনে আমার ভাইকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।
অভিযোগের বিষয় রেজাউলের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন,আমার ইচ্ছা হয়েছে আমি তিনটি বিয়ে করেছি। প্রয়োজনে আরও বিয়ে করবো তাতে আপনার কি। অন্তস্বত্তা স্ত্রীকে কিভাবে তালাক দিলেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন আমার ইচ্ছা হয়েছে আমি দিয়েছি। শাশুড়ির জমি লিখে নিয়ে তাকে খেতে না দেওয়ার বিষয় প্রশ্ন করলে তিনি রেগে গিয়ে বলেন সে কৈফিয়াত আমি আপনাকে দেব না। জামায়াত করেন কি না এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন আগে করতাম এখন করিনে। ভাই আপনি সাংবাদিক আমার বিরুদ্ধে লিখে কিছু হবে না। আপনি যা ইচ্ছা লিখেন এভাবে তিনি দাম্ভিকতা দেখিয়ে মোবাইলেন সংযোগ বিছিন্ন করে দেন।