আনারস কেন খাবেন?
লাইফস্টাইল ডেস্ক:
কমবেশি আমরা সবাই ফল খাই। তবে কেউ কি আর হিসেব কষে খাই কোন ফলে কি উপাদান আছে? আর কোন ফলের কোন উপাদান শরীরের কি উপকারে আসে? সেগুলো জানলে আমরা আমাদের নিয়মিত খাদ্য তালিকাকে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা মোতাবেক সাজিয়ে নিতে পারি।
বাজারে এখন পাওয়া যাচ্ছে নানা ধরনের মৌসুমি। মৌসুমি ফলগুলোর মধ্যে আনারস অন্যতম। শুধুই কি টক স্বাদের ফল এটি! এর যে কত উপকারিতা, আমরা অনেকেই তা জানি না। সহজলভ্য ফল আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরকে ফিট ও সুস্থ রাখবে। আনারস ফাইবার, ভিটামিন-সি, পটাশিয়াম, ফোলেট, ম্যাগনেসিয়াম ও ম্যাংগানিজ সমৃদ্ধ। আর এই সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খেতে পারেন আনারস। ফ্ল্যাভোনয়েড থাকায় আনারস পুষ্টিগুণেও ভরপুর।
কিন্তু আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা জানেন না রোগ প্রতিরোধে প্রতিদিন কতটুকু আনারস খাবেন? তাইতো আজ আপনাদের জানাবো রোগ প্রতিরোধে প্রতিদিন কতটুকু আনারস খাবেন তারই পরিমাণ।
রোগ প্রতিরোধে প্রতিদিন কতটুকু আনারস খাবেন তার পরিমাণ জেনে নিন-
১. আনারসের রস না খেয়ে ফল খাবেন, তবেই পুষ্টি সম্পূর্ণ হয়। কারণ রসে ফাইবার থাকে না।
২. নিয়মিত ছোট বাটির এক বাটি অর্থাৎ কয়েক টুকরো আনারস খেলে সহজেই বেশ কিছু রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। পাঁচ থেকে ছয় টুকরো আনারস প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় রাখলেই তা যথেষ্ট।
এছাড়াও ফেনোলিক অ্যাসিড বা ফ্ল্যাভোনয়েড থাকায় এই ফল পুষ্টিগুণে ভরপুর। বর্ষাকালে হজমের একটা সমস্যা দেখা যায়, সেক্ষেত্রে ব্রোমেলেইন উৎসেচক প্রোটিনের অণুগুলোকে ভেঙে দেয় ফলে ক্ষুদ্রান্ত্রের শোষণে সুবিধা হয়।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, আনারসে থাকে বিটা ক্যারোটিন, যা চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক।
আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাংগানিজ। এই দুটি উপাদান হাড়কে শক্ত করতে এবং হাড়ের গঠনে সাহায্য করে। এছাড়া এগুলো দাঁতের সুরক্ষায়ও কার্যকর।
আনারস ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। আনারসের থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং ফ্যাটের পরিমাণ অনেকটাই কম। যা শরীরের ওজন অযাচিত বৃদ্ধির কারণ হয় না।
আনারসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় তা ভাইরাসজনিত ঠান্ডা ও কাশি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। তাছাড়া জ্বর ও জন্ডিস প্রতিরোধে আনারস বেশ উপকারী। এছাড়া নাক দিয়ে পানি পড়া, গলাব্যথা এবং ব্রংকাইটিসের ক্ষেত্রেও আনারসের রস খেলে উপকার পাবেন।
আনারসে থাকা ক্যালরি আমাদের শক্তির জোগান দেয়। এতে থাকা প্রোটিন ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, ত্বককে কুঁচকে যাওয়া থেকে বাঁচায়। এছাড়া দেহের তৈলাক্ত ত্বক, ব্রণসহ সব রূপলাবণ্যে আনারসের যথেষ্ট কদর রয়েছে।
এছাড়া একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত আনারস খান, তাদের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই কম।
পুষ্টিসাধনসহ দেহকে সুস্থ রাখতে আনারস একটি অতুলনীয় ও কার্যকরী ফল। এটি তুলনামূলকভাবে দামে সস্তা এবং সহজলভ্য। এছাড়া এর বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যে কোন একটি ফল থাকলে মন্দ হয় না। এক্ষেত্রে আনারসকে প্রাধান্য দেয়া যেতেই পারে।