সাতক্ষীরায় সাংবাদিক ও মাদ্রাসা সুপার হত্যা প্রচেষ্টা মামলায় নাহিদসহ দুই আসামীর জামিন না মঞ্জুর
আসাদুজ্জামান:
ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি ও বকচরা আহমেদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার সাংবাদিক রমজান আলীসহ চার জনকে কুপিয়ে ও ছুরকাঘাত করার ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা প্রচেষ্ঠার মামলার প্রধান আসামী কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদসহ দুই আসামীকে জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরন করেছে আদালত। আজ রবিবার দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির হয়ে উক্ত আাসামীরা জামিন আবেদন জানালে আদালতের বিচারক মোঃ জিয়ারুল ইসলাম তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন। এনিয়ে এ মামলায় মোট তিন আসামী জেল হাজতে রয়েছে।
জামিন না মঞ্জুরকৃত আসামীরা হলো, শহরের ইটাগাছা এলাকার মৃত গিয়াস উদ্দীনের পুত্র ও এ মামলার প্রধান আসামী কিশোর গ্যাং লিডার মোঃ নাহিদ (২৬) এবং বাঁকাল এলাকার মোঃ সাবদুল’র পুত্র ও এ মামলার তিন নম্বর আসামী মোঃ সিরাজুল ইসলাম (২৭)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ২৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ সোমবার সকাল ১১টার দিকে কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদ ও রিপনসহ তাদের গুন্ডাবাহিনী হাতে রাম দা, লোহার রড, ছুরি, লোহার হাতুড়ি, জিআই পাইপ ও বাঁশের লাঠি সহকারে বেআইনী জনতা দলবদ্ধ হয়ে সাতক্ষীরা শহরের বাঁকালস্থ সাংবাদিক রমজান আলীর বাড়িতে অনধিকারভাবে প্রবেশ করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাচ করতে থাকে। এতে রমজান আলী প্রতিবাদ করলে ৪নং আসামী আব্দুল গফফারের হুকুমে নাহিদ, রিপন, সিরাজুলসহ অন্যান্য আসামীরা তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকে। এ সময় তার ডাক চিৎকারে বোন সাজিদা খাতুন, ভাগ্নে ফাহিম সরদার ও ভাইপো (রমজানের ছেলে) ফারহান ফেরদৌস তাকে রক্ষা করতে আসলে উক্ত আসামীরা তাদেরও মারপিট করতে থাকে। এক পর্যায়ে ১ নং আসামী নাহিদ হত্যার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে সজোরে রমজানের পেটের বাম পাশে পাজরের নিচে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এরপর ২নং আসামী রিপন হত্যার উদ্দেশ্যে জিআই পাইপ দিয়ে বোন সাজিদাকে মারতে গেলে তার বাম চোখে লেগে থ্যাতলানোসহ রক্তাক্ত জখম হয়। ৩নং আসামী সিরাজুল হত্যার করার উদ্দেশ্যে ভাইপো ফারহানকে রামদা দিয়ে তার পিঠের বাম পাশে কোপ মারে। এতে সে গুরুতর জখম হয়। আসামী আব্দুল গফফার হত্যার উদ্দেশ্যে ভাগ্নে ফাহিমকে ধারালো দা দিয়ে মাথায় কোপ মারতে গেলে সে মাথা সরিয়ে নিয়ে হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে তার ডান হাতের কনুইয়ের নিচে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় রমজান ছাড়াও তার বোন সাজিদা, ভাইপো ফারহান ও ভাগ্নে ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। আহতরা সবাই সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎস নিয়েছেন। আহতদের মধ্যে রমজান আলীর অবস্থা আশংকাজনক। এ ঘটনায় আহত রমজান আলীর মেঝ ভাই আব্দুর রহমান বাদী থানায় নাহিদ, রিপন, সিরাজুল গফফারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পরদিন সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় রবিবার নাহিদ ও সিরাজুল আদালতের কাছে আতœসমর্পন করে জামিনের আবেদন জানালে আদালতের বিচারক তাদের জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন। এর আগে আব্দুল গফফার এ মামলায় জেল হাজতে রয়েছেন। এদিকে, কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদের বিরুদ্ধে এর আগেও শহরের ইটাগাছা এলাকার আবুল হোসেনের পুত্র মুজাহিদুর রহমান অন্তুকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো দা দিয়ে বাম হাতের ৪টি আঙ্গুল কেটে নেয়া ও একই এলাকার আব্দুস সবুরের মালিকানাধীন আলম এন্টার প্রাইজের ৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এ মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি এএসএম আশরাফুল আলম উক্ত দুই আসামীর আদালত কর্তৃক জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।