আশাশুনিতে ২ মাস এসি ল্যান্ড নেই, সহস্রাধিক নামজারী ঝুলে আছে

জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি:

আশাশুনি উপজেলায় ২ মাস ১০দিন সহকারী কমিশনার (ভূমি) না থাকায় ভারপ্রাপ্তের দায়িত্বে আছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রনি আলম নুর । তিনি নিজ কার্যালয়ে ব্যস্ত থাকায় ভূমিসংক্রান্ত কাজে সময় দিতে পারায় জনমাধারনের ভোগান্তিরর অন্তনেই।

উপজেলার জমির মালিকসহ ভিন্ন উপজেলার জমির মালিকরা প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে সেবা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন।

উপজেলা ভূমি অফিস গুরুত্বপূর্ণ অফিস হওয়ায় কর্মকর্তা পোষ্টিং জরুরী হওয়া স্বত্বেও এখানে কোন অফিসার ননা থাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার অতিরিক্ত দদায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাহী অফিসারের দাপ্তরিক দায়িত্ব অত্যাধিক হওয়ায় তার পক্ষে নিয়মিত ভূমি অফিসের কাজ করা সম্ভব হয়না।

সহকারী কমিশনার (ভূম) অফিস সূত্রে জানা গেছে, সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপা রানী সরকার এ বছরের ১৪ আগস্ট মাতৃকালীন ছুটিতে চলে যান। এরপর থেকে পদটি ২ মাস ১০দিন শূন্য হয়ে আছে।

কোন সহকারী কমিশনার না আসার কারন জানা যায়নি।তবে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌছেছে। সহস্রাধিক নামজারি খারিজ আবেদনসহ মিস কেস ও ভিপিসহ ভূমি সম্পর্কিত সব ধরনের কাজ ঝুলে রয়েছে। অফিস খোলা থাকলেও কর্মকর্তা না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো হচ্ছে না। এ কারণে সেবা ব্যাহত হচ্ছ।

এতে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে, অন্যদিকে কর্মচারীদের দিন কাটছে খুব কষ্টের ভিতর গত সোমবার সকালে সরেজমিনর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, দূরদূরান্ত থেকে আশা মানুষেরা খারিজসহ ভূমিসংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের জন্য অফিসের সামনে ভিড় করছেন।

কর্মকর্তা না থাকায় দিনের পর দিন ঘুরছেন তারা। নামজারি (খারিজ) ছাড়া জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারছেন না তারা। কবে নতুন এসি ল্যান্ড আসবেন তাও জানেন না তারা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।

এ ব্যাপারে কথা হয় বড়দল ইউনিয়ন থেকে নামজারি খারিজের জন্য আসা সেলিনা খাতুন বলেন, ‘দুই মাস আগে খারিজের আবেদন জমা দিয়েছি।

বারবার এসে ফিরে যাচ্ছি। এসি ল্যান্ড না থাকায় কাজ হচ্ছে না। নতুন এসি ল্যান্ড কবে আসবেন কেউ বলতেও পারছেন না। নামজারি (খারিজ) ছাড়া জমি বিক্রি করতে পারছি না।’

কুল্যা ইউনিয়ানের উজ্জ্বল কুমার দাস বলেন, দু’মাস আগে নামজারি খারিজের আবেদন জমা দিয়েছি। এখনো ঘুরছি। অফিসার না থাকায় আমাদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

কাদাকাটির কামরুন নাহারসহ একাধিক ভূমি মালিক বলেন, ‘দুই মাস হলো মিস কেসের আবেদন করেছি। কর্মকর্তা নেই, তাই শুনানি হচ্ছে না।’

সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে ‘এসি ল্যান্ড স্যারের পদটি দুই মাস থেকে শূন্য থাকায় জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে। এ পর্যন্ত নামজারি (খারিজের) আবেদন জমা পড়েছে ১০০০ এর অধিক -এর বেশি।

মিস কেস আবেদন পড়েছে বহু।এসি ল্যান্ড ছাড়া এ কাজগুলো করা সম্ভব নয়। ইউএনও স্যার ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকলেও ব্যস্ততার কারণে সময় দিতে পারছেন না। প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছে, আমরা যতটা সম্ভব বুঝিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছি।’

এ ব্যাপারে উপজেলা সাব-রেজিস্টার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হয়তো কিছুদিনের মধ্যে রেজিস্ট্রির কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। দীর্ঘদিন এসি ল্যান্ড না থাকায় নামজারি না হওয়ার কারণে রেজিস্ট্রি বন্ধ হয়ে যাবে।

সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রনি আলম নুর জানান, ‘নিজ দপ্তরের কাজের চাপ সামলে সপ্তাহে দুদিন সেখানে বসছি। নতুন এসি ল্যান্ড না আশা পর্যন্ত একটু অসুবিধা হচ্ছে। তিনি এলে এ সমস্যা থাকবে না। নতুন এসি ল্যান্ড নিয়োগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিষয়। আশা করছি শিগগিরই এসে যাবেনা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)