শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ডেস্ক নিউজ:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহু কাঙ্ক্ষিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন (সফট ওপেনিং) করেছেন।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শনিবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটে তিনি শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল এরিয়ায় এসে পৌঁছান। এসময় দেশের গানের সঙ্গে মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন করে তাকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ -এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন।
‘স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবতার সংযোগ’ স্লোগান নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন করা হয়েছে। দেশে সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন হওয়া মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে উদাহরণ তৈরি করেছে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। মাত্র ৩ বছরেই উদ্বোধন করা হচ্ছে নান্দনিক এই স্থাপনা।
তৃতীয় এ টার্মিনালে মিলবে উন্নত বিশ্বের আধুনিক বিমানবন্দরগুলোর মতো নানা সুবিধা। সরকারের অগ্রাধিকারভিত্তিক এ মেগা প্রকল্পে যাত্রীদের জন্য থাকছে অত্যাধুনিক সব সুবিধা। ই-গেট, হাতের স্পর্শ ছাড়া চেকিং, যাত্রীদের চলাচলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংকেত ব্যবস্থা ও নিজেই নিজের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা যাবে এ টার্মিনালে। এছাড়া সুপরিসর অ্যাপ্রোন, বিশাল গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত লাগেজ বেল্ট যাত্রীদের দেবে নতুন অভিজ্ঞতা।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল ভবন নান্দনিক নকশায় সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে মূল টার্মিনাল ভবনের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা সবচেয়ে আকর্ষণীয়। এখন সেখানে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ চলছে। এক হাজার ৪৪টি গাড়ি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বহুতল কার পার্কিং তৈরির কাজ চলছে।
এছাড়া বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের জন্য কাস্টমের একটি হল ও ছয়টি চ্যানেল তৈরির কাজ চলছে। এর মধ্যে তৃতীয় টার্মিনালের দক্ষিণ প্রান্তে ৩ হাজার ৬৫০ বর্গমিটার জায়গাজুড়ে ভিভিআইপি ও ভিআইপি যাত্রীদের জন্য আলাদা বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে বহুতল কার পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এখানে এক হাজার ৩৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।
বর্তমানে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মিনালে দিনে ৩০টির বেশি উড়োজাহাজ সংস্থার ১২০-১৩০টি প্লেন উড্ডয়ন ও অবতরণ করে। প্রতিদিন এসব উড়োজাহাজের প্রায় ২০ হাজার যাত্রী বিমানবন্দরের দুটি টার্মিনাল ব্যবহার করেন। এ হিসাবে বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীর সেবা দেওয়ার সুযোগ আছে। আর তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে আরও এক কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
২০১৭ সালে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়। নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। আর বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এ নির্মাণকাজ করছে জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং।