তালায় জমি দখল করে রাতারাতি নির্মাণ হলো ঘর!

জহর হাসান সাগর:
সাতক্ষীরার বেশি শক্তি যার জবর দখল তার এমনি ভাবে গায়ের জোরে অন্যের জমি জবর দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তালার পল্লীতে।
ঘটনাটির তালা উপজেলা তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কলাপোতা গ্রামে ঘটেছে। কলাপোতা গ্রামের জাহান বক্স গাজীর ছেলে মোঃ খোরশেদ গাজীর খরিদ কৃত সম্পত্তির রাতারাতি একই গ্রামের হাজারি লাল ঘোষের ছেলে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ উক্ত জমি জবর দখল করেন। খোরশেদ গাজী যেন জবর দখল ঠেকাতে না পারে তার জন্য পাটখড়ি পুড়িয়ে খোরশেদ গাজীর নামে তালা থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।তার তালা থানার মামলা নং -০২ তারিখ ০৪/০৭/২০২৩ ধারা ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/২৯৫/৪৩৬/৪২৭/৫০৬ পিসি। এছাড়া খোরশেদ গাজীকে জামায়াত নেতা হিসেবে মিথ্যা মামলা দিয়ে দিবে বলে হুমকি প্রদান করেন।”কাগজ যার জমি তার”বাক্যটি মিথ্যা প্রমাণ করেছেন জমি দখল কারী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাহার ভাষ্য মতে পেশিশক্তি যার জমি তার।
সূত্র মতে ,তেরছি মৌজার জে এল নং-১০১  এর এস এ  ২৯৬ খতিয়ানের ২৫৭৩ দাগের ৩১ শতক সম্পত্তির রেকর্ডের মালিক শ্রী ব্রজ্য নাথ ঘোষ এর নিকট থেকে গত ইং ২৫/০৫/১৯৬৩সালে রেজিঃ কোবলা ২১৩৩ নং দলিল মূলে খোরশেদ গাজীর মাতা ছায়রা বিবি খরিদ করেন।ছায়রা বিবির নিকট থেকে গত ইং ০৯/০৫/২০২২ তারিখে হেবা নামা ২১০৮/২০২২ নং দলিল মূলে খোরশেদ গাজী একক মালিকানা প্রাপ্ত হন।সেই হতে খোরশেদ গাজী স্বত্ব দখলীয় থাকা অবস্থায় বছর খানিক পূর্বে পেশিশক্তি ব্যবহার করে রাতারাতি জবর দখল করেছেন বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী খোরশেদ গাজীর জমি জবর দখলের সহযোগিতা কারী হিসেবে তীর ছুঁড়ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমারের  দিকে। রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এলাকার ধনাঢ্য পরিবারের প্রধান।তার পরিবারের বনজ,ফলজ,ফসলি সহ ১৫ বিঘার অধিক জমি আছে। তিনি খুব বিত্তবান লোক।
প্রকাশ থাকে যে ভুক্তভোগী খোরশেদ গাজী
আজবুজ হওয়ায় ২১০৮ নং দলিলের বহু পূর্বেই ১/১ খতিয়ানের অন্তর্ভূক্ত পূর্বক এনিমি সম্পত্তির খ তফসিল অন্তর্ভূক্ত হন।ভুক্তভোগী খোরশেদ গাজী স্বল্প শিক্ষিত ও পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে জীবিকার তাগিদে ভিন্ন জেলায় কাজে থাকার কারনে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে না পারলে ও বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালত তালা সাতক্ষীরায় উক্ত ১/১ এর খতিয়ান সংশোধনের জন্য দেং- -১৫৯/২২নং এর একটি মামলা আনয়ন করেন। উক্ত মামলাটি এখন চলমান আছে।দেঃ আদালতে মামলা চলমান থাকার পরেও রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে, পি-১৩৭৬/২২ নং মামলা দায়ের করলে উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদনে খোরশেদ গাজী দখলে আছে মর্মে আমার তদমর্মে উল্লেখ করায় এবং দেঃ ১৫৯/২২ মামলা চলমান থাকায় মামলাটি নথি জাত করেন। এবং উল্লেখ করেন মামলার দ্বিতীয় পক্ষ খোরশেদ গাজী দখল থাকবে মর্মে ওসি তালা ব্যবস্থা নিবেন।
প্রতিবেশী স্বপ্না রানী জানান, আমি শুনেছি এই জমি নিয়ে ঝামেলা চলছে।তবে মারামারি হয়েছে এমনটা দেখিনি ।স্থানীয় বাসিন্দা হারুন গাজী বলেন, খোরশেদ গাজী হিন্দুদের কাছ থেকে জমি কিনে দীর্ঘ দিন ধরে ভোগ দখলে ছিলো। এখন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে জবর দখলে আছে।
খোরশেদ গাজী ও এনামুল গাজী জানান, আমাদের নিজেদের জমি ওরা জবর দখল করে নিয়েছে। আমারা থানায় বারবার মামলা করতে যেয়ে মামলা করতে পারি নি।আমরা কোর্টে একটা দেওয়ানি মামলা করেছি। আমারা ন্যায় বিচার চাই।
এ বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, আমি এই জমির মালিকদের কিছু টাকা দিয়ে কিনেছি। মৃত মোকছেদ গাজীর ছেলে হযরত গাজী দখল  দেখিয়ে দিয়েছেন। আমারা কোর্টে খোরশেদ গাজী দের নামে মামলা করেছি,ওরাও আমাদের নামে সিভিল কোর্ট মামলা করেছেন।
রবীন্দ্রনাথ ঘোষের স্ত্রী অবলা রাণী ঘোষ জানান,ওরা আমাদের ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। আমার তুলসি গাছ উপড়িয়ে নষ্ট করে দিয়েছে।ঘরটি কিসের ছিলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,ঘরটি পাটখড়ি ও কাঠ রাখার জন্য এবং ঘরের ভিতরে রান্নার চুলা ছিলো।পূজার জন্য তুলসী গাছ আছে।তাহলে কোন তুলসী গাছ উপড়ে ফেলেছে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেন নি।পাটখড়িতে আগুন দেওয়ার দিন রাতে কখন রান্না করেছেন এবং কী কাঠ দিয়ে জানতে চাইলে বলেন,রাত সাড়ে নয়টার দিকে পাটখড়ি,কানচি মশাল ও কাঠ দিয়ে। রান্না পর চুলার উপর কিছু দিয়েছেন এবং আগুন নিভিয়ে ছিলেন কি না  এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন কিছু দেয়নি ও নিভাই নি। তাহলে চুলার আগুনে ঘর পুড়িয়ে কি না এমন জবাবে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেনি।
রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এর ছেলে অনিমেষ ঘোষ বলেন আমরা হযরত গাজীর কাছ থেকে জমি কিনেছি আমাদের দলিল আছে তাই দখলে নিয়েছি। দলিল নাম্বার টা এখন বলতে পারবো না, পরে বলতে পারবো। এ বিষয়ে তালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার বলেন, আমার কাছে একটা অভিযোগ দিয়েছিলো।এই জমির মালিক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ না। এই জমির প্রকৃত মালিক অন্য এক জন,তিনি ভারতে আছে। রবীন্দ্রনাথ ভূমিহীন তাই সে ঐ জমি ভোগ দখল করে এটা আমি জানি এবং ঐ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও জানেন। চেয়ারম্যান এর কাছ থেকে জেনেছি তিনি ভূমিহীন।
তিনি ভূমিহীন কিনা সত্যতা যাচাইয়ে তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ভূমি হীন এটা আমি বলতে পারবো না।তবে স্থানীয় মেম্বার এর কাছ থেকে জানতে পেরেছি তার নামে কোন রেকর্ডীয় কোন জমি নেই। এখানে ভারতে চলে যাওয়া হিন্দুদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। কাগজপত্র যাছাই বাছাই করলে একটা সমাধান হবে।
জমির জবর দখল কারী রা বলছে তাদের খরিদ কৃত জমি, এবং কাগজপত্র আছে। অপর দিকে জনপ্রতিনিধি রা বলছেন তিনি ভূমিহীন বিধায় উক্ত জমি দখলে আছে।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)