নিউজিল্যান্ডের সুপার মার্কেটে প্লাস্টিকের ব্যাগ নিষিদ্ধ
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
নিউজিল্যান্ডে সুপার মার্কেটে তাজা পণ্যের জন্য প্লাস্টিকের ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই দেশটি। এতে করে দেশটির সুপার মার্কেটগুলোতে প্লাস্টিকের পাতলা ব্যাগের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা প্রসারিত হলো। এসব ব্যাগ সাধারণত ফল বা শাকসবজি রাখতে ব্যবহৃত হয়।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত শনিবার (১ জুলাই) এই পদক্ষেপটি কার্যকর হয়েছে। মূলত একক-ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে বৃহত্তর সরকারি প্রচারণার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি।
বিবিসি বলছে, ২০১৯ সালে বাড়িতে নেয়া প্লাস্টিকের ব্যাগ নিষিদ্ধ হওয়ার পরে বেশিরভাগ ক্রেতা এরইমধ্যে তাদের নিজস্ব ব্যাগ দোকানে নিয়ে থাকেন। এছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক দেশই প্লাস্টিকের ব্যাগের ওপর ফি বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
নিউজিল্যান্ডের সহযোগী পরিবেশমন্ত্রী রাচেল ব্রুকিং বলেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড খুব বেশি বর্জ্য, অত্যধিক পরিমাণে প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন করে থাকে।’
তিনি বলেছেন, ২০১৯ সালে মোটা ব্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর থেকে ১০০ কোটিরও বেশি প্লাস্টিকের ব্যাগ সংরক্ষণ করা হয়েছে। আর নতুন এই পদক্ষেপটি প্রতি বছর ১৫০ মিলিয়ন প্লাস্টিকের ব্যাগের ব্যবহার রোধ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে সর্বশেষ এই পদক্ষেপের বিষয়ে সমালোচকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, এর ফলে ক্রেতারা কেবল ডিসপোজেবল কাগজের ব্যাগে পণ্য রাখতে পারেন যা এখনও সুপারমার্কেটে পাওয়া যায়।
সহযোগী পরিবেশমন্ত্রী রাচেল ব্রুকিং বলেছেন, ‘আমরা সত্যিই একক-ব্যবহারযোগ্য প্যাকেজিং কমাতে চাই। আমরা চাই, মানুষ তাদের নিজস্ব ব্যাগ আনুক এবং সুপারমার্কেটগুলো পুনরায় ব্যবহারযোগ্য পণ্যের ব্যাগ বিক্রি করুক।’
বিবিসি বলছে, সুপারমার্কেট চেইন কাউন্টডাউন ইতোমধ্যেই নিউজিল্যান্ডজুড়ে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য পলিয়েস্টার জাল ব্যাগ বিক্রি শুরু করেছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই দেশটিতে এই সুপারমার্কেট চেইনটি ১৮৫টিরও বেশি স্টোর পরিচালনা করে থাকে।
কোম্পানিটি আশা করছে, এই ধরনের পদক্ষেপ ক্রেতাদের ফল এবং সবজির জন্য পুনরায় ব্যবহারযোগ্য ব্যাগ ব্যবহার করতে উৎসাহিত করবে। কাউন্টডাউনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ক্যাথরিন ল্যাঙ্গাবীর বলছেন, ‘আমরা জানি পরিবর্তন কঠিন এবং (এই কাজে) তাদের আরও একটু সময় লাগবে। এছাড়া আমরা কিছু রাগান্বিত গ্রাহকেরও দেখা পাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, নিউজিল্যান্ড সরকার জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অন্যান্য আরও উদ্যোগ নিয়েছে এবং সেসব ক্ষেত্রে বেশ অগ্রগতিও করেছে। গত বছরের অক্টোবরে ভেড়া এবং অন্যান্য গবাদি পশুর মতো খামারের প্রাণীদের উৎপাদিত গ্রিনহাউস গ্যাসের ওপর কর আরোপের প্রস্তাব করেছিল নিউজিল্যান্ড।
এর ফলে ২০২৫ সালের মধ্যে কোনো না কোনো আকারে কৃষি নির্গমনের জন্য কৃষকদের অর্থ প্রদান করতে দেখা যাবে। মূলত নিউজিল্যান্ডের মোট নির্গমনের প্রায় অর্ধেকের জন্য দায়ী দেশটির কৃষি শিল্প।