চিংড়িখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের উপর আকস্মিক হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি:
গাড়ী দুর্ঘটনা নয় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের চিংড়াখালী মাধ্যমিক বিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক জয়দেব বিশ্বাস কে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলাকারী ইন্দ্রজিৎ আউলিয়া ও তার সহযোগী সহ নির্দেশকারীদের গ্রেপ্তার সহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় চিংড়াখালী মাধ্যমিক বিদ্যানিকেতনের শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী, এসএসসি পরীক্ষার্থী অভিভাবক ও এলাকাবাসীর আয়োজনে উক্ত স্কুলের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
চিংড়াখালী মাধ্যমিক বিদ্যানিকেতনের সহকারী শিক্ষক ব্রজেন্দ্র নাথ মন্ডলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে রাখেন উক্ত বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুধান্য মন্ডল,যোগেশ চন্দ্র মন্ডল, সন্দীপ কুমার গায়েন, গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্নত আলী গাজী, উক্ত স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী জয়ন্ত মন্ডল, সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী মাইমুনা আক্তার নিশি,অভিভাবক খবিরুল ইসলাম, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শেফালী রানী মন্ডল। এসময় স্কুলের শিক্ষক, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমাদের প্রধান শিক্ষকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলাকারী ইন্দ্রজীত আওলিয়া ও তার সহযোগী সহ নির্দেশ কারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির চাই যাতে বাংলার মাটিতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।
উল্লেখ্য, গত ২৯শে জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে সন্ধ্যার সময় জমিদার বাড়ির মাঠের পাশে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকাকালীন সময়ে একটি গাড়ি এসে ধাক্কা মারে। ফলে জয়দেব বিশ্বাস গুরুতর আহত হন। শ্যামনগর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে রেফার করেন। পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় খুলনা মেডিকেলে রেফার করেন। তারপর কিছুদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর খুলনা সিটি হাসপাতাল থেকে অপারেশন করান। এখন তিনি সুস্থ।
অভিযোগ করা হয় ইন্দ্রজিৎ নাকি তাকে হত্যার জন্য ষড়যন্ত্র করেন। এ বিষয়ে ইন্দ্রজিতের কাছে জানতে চাইলে ইন্দ্রজিৎ বলেন, জয়দেব স্যারকে আমি প্রভুর মত দেখি, স্যার আমাকে রমজাননগর গহর আলম নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চাকরি দেবে বলে, আমার কাছ থেকে মোক্তায় মোক্তায় টাকা নিয়েছে। বলে আজ ১ লাখ লাগবে, কিছু দিন পর বলে আজ ৫০ হাজার লাগবে, ৬০ হাজার লাগবে এমন করে করে আমার আমার কাছ থেকে ৭/৮ লাখ টাকা নিয়েছে। আমি জায়গা জমি বিক্রি করে ও ধার করে তিনি যখন টাকা চেয়েছে তখন দিয়েছি। স্যার আমাকে সাড়ে ৩ বছর ধরে রাত নেই দিন নেই চাকরের মত বাড়ির বাজার করা, মেয়েকে স্কুল দিয়ে আসা, নিয়ে আসাসহ যাবতিয় কাজ করিয়ে নিয়ে। এমনকি তার বাড়িতে আমি প্রসাব, পায়খানাও পরিষ্কার করেছি।
কিছু দিন আগে স্যার এক্সিডেন্ট করে আমি তাকে নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে বাড়িতে নিয়ে আসি। এখন এতো মাস পরে এসে আমাকে দোষারাফ করেছে। তার কারণ হলো আমাকে চাকরি দেয়ার নাম করে যে টাকা নিয়েছে, সেই টাকা দেবেনা ও চাকরি ও দেবে না বলে আমার বিরুদ্ধে স্কুলের শিক্ষক, কর্মচারী, ছাত্র -ছাত্রী দিয়ে মানববন্ধন করিয়েছে। ইন্দ্রজিৎ আরও বলেন অভিযোগের আর একটা কারণ হলো আমার কাছ থেকে যে টাকা নিয়েছে, তার থেকে বেশি টাকা অন্য প্রার্থীর কাছ নিয়ে তাকে চাকরি দেওয়া চেষ্টা করছে । আমার আর কিছু নাই আমি সর্বহারা হয়ে গেছি। বাবা ক্যান্সার রোগী, মায়ের পা ভাঙা। এখন আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় নাই।