সাতক্ষীরায় সাংবাদিক হাফিজকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন,ইউপি সদস্য ও তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর বিরুদ্ধে পণ্যগ্রাফি আইনে মামলা
রঘুনাথ খাঁ:
সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সাতনদী পত্রিকার কালিগঞ্জ প্রতিনিধি অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য সাংবাদিক হাফিজুর রহমানকে(৬০) দূর্ণীতি সংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার নাম করে শহরের বৈশাখী হোটেলের সামনে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতকভাবে হোটেল কক্ষে ঢুকিয়ে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও চিত্র সোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাংবাদিক হাফিজুর রহমানের স্ত্রী কালিগঞ্জের বাজারগ্রামের হোসনেয়ারা বেগম বাদি হয়ে বৃহষ্পতিবার রাতে সাতক্ষীরা সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। একক স্বাক্ষরে মামলাটি রেকর্ড করেন পুলিশ পরিদর্শক মোঃ নজরুল ইসলাম।
মামলায় কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মুকুন্দমধুসুধনপুর গ্রামের এলাহী বক্স গাজীর ছেলে বিষ্ণুপুর ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের (৩৩) ও তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী একই গ্রামের মিজানুর রহমানের মেয়ে শারমিন আক্তার রিমি(৩১)সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪জন কে আসামী করা হয়েছে।
মামলার বিবরনে জানা যায়, শারমিন আক্তার রিমি সাংবাদিক হাফিজুর রহমানের নিকট তার তালাকপ্রাপ্ত স্বামী বিষ্ণুপুর ইউপি সদস্য আব্দুল কাদেরের সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করে বøাকমেইল করার তথ্য প্রদান করেন। পরে শারমিন আক্তার রিমি তার মোবাইল ফোন থেকে হাফিজুর রহমানের স্যামসং জে সেভেন প্রাইম মডেলের মোবাইল ফোনে শেয়ারাইট এর মাধ্যমে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও স্থানান্তর করেন। বিষয়টি পরে আসামী আব্দুল কাদের জানতে পারেন। হাফিজুর রহমান বিষয়টি থানায় অভিযোগ করার জন্য শারমিনকে আক্তারকে পরামর্শ দেন।
মামলায় আরো বলা হয়েছে যে ,আসামী শারমিন আক্তার আরো তথ্য দেওয়ার জন্য সাংবাদিক হাফিজুর রহমানকে শহরের বৈশাখী হোটেলের সামনে আসতে বলেন। সে অনুযায়ি হাফিজুর গত ২৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই হোটেলের সামনে যান। শারমিন তাকে হোটেলের অভ্যর্থনা কক্ষে বসে কথার বলার জন্য ডাকেন। সেখানে যাওয়া মাত্রই শারমিন আক্তার ও আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা আব্দুল কাদের ও তার ৩/৪ জন সহযোগী হাফিজকে জোরপূর্বক ৩০৯ নং কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে জোরপূর্বক বিবস্ত্র করে কাদের ও শারমিনসহ তাকে জুতোপেটা, কিল ঘুষি মেরে মারাত্মক জখম করে পকেটে থাকা ২৫ হাজার টাকা কেড়ে নেয়। এ সময় কাদের তার মোবাইল দিয়ে নগ্নভিডিও চিত্র ধারণ করে তার বিভিন্ন সোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। পরে আব্দুল কাদের প্রভাব খাটিয়ে নিজে বাদি হয়ে হাফিজুর রহমান ও শারমিনের বিরুদ্ধে ২৭ এপ্রিল পর্ণগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় বাদি আব্দুল কাদের শারমিনকে নিজের স্ত্রী দাবি করলেও ঠিকানা একই গ্রামের পরিবর্তে শ্যামনগরের গাবুরার খলিশাবুনিয়ার মিজানুর রহমানের মেয়ে দেখানো হয়। হাফিজকে শারমিনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের কথা বলা হলেও ২৯০ ধারায় মামলা না দিয়ে পণ্যগ্রাফি আইনে মামলা দেওয়া হয়।
মশরকাটি গ্রামের আবু বক্কর জানান, তার চাচাত ভাই হাফিজুর রহমানের নির্যাতনকালিন নগ্ন ভিডিও চিত্র ফেইসবুক পেইজে, অনলাইনে ও পত্রিকায় দিয়ে পরিকল্পিতভাবে চরিত্রহনন করেছে একটি পক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা করা হবে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(তদন্ত ) মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, কাদেরের দায়েরকৃত মামলায় জেল হাজতে থাকা শারমিনকে ৪ এপ্রিল হোসনেয়ারা বেগমের দায়ের করা মামলায়(জিআর-২৬২, সাতক্ষীরা) গ্রেপ্তার দেখানো হবে। প্রধান আসামী আব্দুল কাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।