বঙ্গবাজার: ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই, বেচাকেনা শুরু আজ
অনলাইন ডেস্ক:
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত রাজধানীর বঙ্গবাজারে আজ থেকে চৌকি বসিয়ে (অস্থায়ী) আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ব্যবসা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। এর মধ্য দিয়ে একরকম ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়েই নামছেন তারা।
বুধবার (১২ এপিল) সকাল থেকে সেই কার্যক্রম চলছে। দুপুর ১২টায় চৌকি বসিয়ে ব্যবসা শুরুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের।
জানা গেছে, প্রত্যেক দোকানি একটি করে চৌকি পাবেন। সেক্ষেত্রে যার একটি দোকান ছিল তার মতো যার একাধিক দোকান ছিল, তিনিও একটি করে চৌকিই বরাদ্দ পাবেন। এদিকে বুধবার বঙ্গবাজারের নিচ তলা ও দ্বিতীয় তলার বরাদ্দ দেয়া হলেও তৃতীয় তলার দর্জির দোকানিরা কোথায় বসবেন তা নির্ধারিত হয়নি। এতে, সাহায্যের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন দোকানিরা।
এর আগে, ঈদ সামনে রেখে বুধবার থেকে চৌকি বসিয়ে অস্থায়ীভাবে বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ব্যবসা শুরু করতে পারবেন বলে জানান দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মুখপাত্র মো. আবু নাছের।
বুধবার থেকে খোলা আকাশের নিচে আবারও বেচাকেনা শুরু করার কথা জানিয়েছেন মো. ইকবাল হোসেন নামে বঙ্গবাজারের একজন ব্যবসায়ীও।
তিনি বলেন, খোলা আকাশের নিচে, চৌকি পেতে আমরা ব্যবসা শুরু করছি। বুধবার সকাল থেকে মার্কেটের জায়গাতেই ব্যবসায়ীরা বেচাকেনা শুরু করবেন।
এর আগে মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বঙ্গবাজারে ঈদের আগেই ব্যবসায়ীরা তাদের ক্ষয়ক্ষতি যাতে কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারেন, সে জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পুরো মাঠজুড়ে বসানো হচ্ছে ইট। ওপরে দেয়া হচ্ছে বালি। আশপাশের ধ্বংসস্তূপ ভেঙে পরিষ্কার করা হচ্ছে।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ইকবাল আরও বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে আমরা চৌকি বা খাট বিছিয়ে মাঠের মধ্যেই ব্যবসা শুরু করব। আমাদের যা আছে ও নতুন করে ধার-দেনা করে কাপড় উঠিয়ে ব্যবসা শুরু করব।
নিজের ক্ষতির পরিমাণ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মার্কেটে আমার দুটি দোকান, এবারের ঈদ উপলক্ষে একটি শো রুম ও দুটি গোডাউন ব্যবহার করছিলাম। প্রায় ৫০ লাখ টালার মালামাল ছিল। কিন্তু আগুনে আমি সব হারিয়েছি।’
গত ৪ এপ্রিল ভোর ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর দলও। সবার চেষ্টায় বঙ্গবাজারে লাগা ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর। আর পুরোপুরি আগুন নেভে ৭৫ ঘণ্টা পর অর্থাৎ ৭ এপ্রিল সকাল ৯টায়।
বঙ্গবাজারের আগুনের ঘটনায় আনুমানিক দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন।