মরণোত্তর দেহদান করতে অনলাইনে নিবন্ধনের সুযোগ
নিউজ ডেস্ক:
মরণোত্তর দেহদানে অঙ্গীকারকারীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। সারাদেশের মানুষকে এটিতে আগ্রহী করে তুলতে সুযোগ থাকছে অনলাইনে নিবন্ধনেরও।
সোমবার সরকারি উদ্যোগে আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গতকালই বিএসএমএমইউ উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদসহ সাতজন দেহদান করতে নিবন্ধন করেছেন।
এই প্রক্রিয়া আরো সহজ করতে মরণোত্তর দেহদানের অগ্রদূত সারাহ ইসলামের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট সেলও গঠন করা হয়েছে।
গত ১৮ জানুয়ারি ‘মস্তিস্ক মৃত (ব্রেইন ডেথ)’ ঘোষিত সারাহ ইসলামের দুটি কিডনি এবং দুটি কর্নিয়া চারজনের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। ঐ প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত ছিলেন তাদের জন্য আয়োজন করা হয় সংবর্ধনার।
বিএসএমএমইউর উপাচার্য ছাড়াও অন্য যারা নিবন্ধন করেছেন তারা হলেন— উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, সারাহ ইসলামের মা শবনম সুলতানা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান।
এছাড়া অনেকে মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করলেও তাদের গতকাল নিবন্ধনের আওতায় আনা হয়নি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এটি অসাধারণ উদ্যোগ। সারাহ ইসলাম যে পথ দেখিয়েছেন, আশা করি এ পথে অনেকে অঙ্গদান করবেন।
তিনি বলেন, চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি অঙ্গদানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
অনুষ্ঠানে সারাহ ইসলামের কিডনি গ্রহীতা শামীমা আক্তার বলেন, সচেতন সব মানুষ যেন দেহদানে এগিয়ে আসেন। আল্লাহ যেন সারাহ ইসলামকে বেহেশত নসিব করেন।
কর্নিয়া গ্রহীতা ফেরদৌস আখতার বলেন, সারাহ ইসলামের চোখ দিয়ে আমি ফের পৃথিবীর আলো দেখতে পাচ্ছি। এ কাজে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সারাহ ইসলামের মা শবনম সুলতানা। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে মঞ্চে আসেন শামীমা আক্তার। তাকে আবেগে জড়িয়ে ধরেন শবনম সুলতানা। পরে শবনম বলেন, আমার সারাহ বেঁচে আছে অনেক মানুষের মাঝে। আমি মনে করি না, সারাহ মারা গেছে। সন্তান হারানোর বেদনা আমার আছে। আমি আজকের দিনের অনুভূতি বোঝাতে পারব না।
সারাহ ইসলাম ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট সেলের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, মরণোত্তর দেহদান সহজ করতে অনলাইনে নিবন্ধনের সুযোগ থাকছে। বিএসএমএমইউর ওয়েবসাইটে নতুন একটি উইন্ডো খোলা হবে। এখানে যে কেউ নিবন্ধন করতে পারবেন। সহজে তথ্য সংরক্ষণ সম্ভব হবে। আগামী এক মাসের মধ্যে এটি চালু হতে পারে।