বিজয়ের মাসেই চলে গেলেন যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল গফফার, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন
কামরুল হাসান :
বিজয়ের মাসেই সকলককে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একাত্তরের যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল গফফার (৮৪ )। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
লড়াকু এই বীরযোদ্ধা গত ৬ ডিসেম্বর ‘কলারোয়া পাক হানাদার মুক্ত দিবস’ এ অংশগ্রহণ করতে পারলেও, পারলেন না এবারের মহান বিজয় দিবসে অংশ নিতে। যুদ্ধকালীন কমান্ডার আবদুল গফ্ফারের বাড়ি উপজেলার বহুড়া গ্রামে। তবে সর্বশেষ তিনি নাকিলা গ্রামের বাড়িতে বসবাস করতেন।
মরহুমের পুত্র এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, তাঁর পিতা সোমবার নাকিলা গ্রামের বাড়িতে দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে আকস্মিক অসুস্থ হয়ে কোনো সময় না দিয়েই মৃত্যুবরণ করেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৬ পুত্র, ৩ কন্যাসহ বিপুল সংখ্যক গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর মঙ্গলবার সকালে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ মরহুমের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এদিকে, মঙ্গলবার বিকেল ৪ টায় স্থানীয় কাজীরহাট হাইস্কুল ময়দানে মরহুমের নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা পূর্ব তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্মাননা জ্ঞাপন ও সশস্ত্র সালাম জানান কলারোয়া থানার একটি চৌকস পুলিশ দল। এরপর তালা-কলারোয়ার সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, থানা প্রশাসন ও কলারোয়া প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান এঁর প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
জানাযা পূর্ব আলোচনায় সদ্য প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফফারের যুদ্ধাকালীন বীরত্বগাঁথা তুলে ধরে বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, পৌর মেয়র মাস্টার মনিরুজ্জামান বুলবুল, থানার অফিসার ইনচার্জ নাসির উদ্দিন মৃধা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলিমুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান স.ম মোরশেদ আলী, মাহাবুবুর রহমান মফে, বেনজির হেলাল, শেখ সোহেল রানা, মাহফুজুর রহমান নিশান, সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম মনি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল গফফারের পুত্র জাকির হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম লিটন, কলারোয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি শিক্ষক দীপক শেঠ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সহ.সভাপতি প্রভাষক সাইফুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ জুলফিকারুজ্জামান জিল্লু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রধান শিক্ষক রাশেদুল হাসান কামরুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, সাংবাদিক সরদার জিল্লু, ফারুক রাজ, জাহাঙ্গীর হোসেন, আজমল হোসেন বাবু প্রমুখ। জানাজা পূর্ব আলোচনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সরদার আমজাদ হোসেন। জানাযা নামাজ শেষে নাকিলা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন করা হয়।