ইউরোপে অ্যান্টিবায়োটিক সংকট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

রোগ মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের সংকট ক্রমেই বাড়ছে ইউরোপের দেশগুলোতে। বিপরীতে কমছে এর উৎপাদন।

শনিবার (১০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, অ্যামক্সিসিলিন, সেফালোস্পোরিনসহ বিভিন্ন ধরনের অতি প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিকের সরবরাহ বাজারে খুবই কম। ফলে কানের সংক্রমণ থেকে শুরু করে নিউমোনিয়ার মতো অতিসাধারণ রোগের চিকিৎসাও ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় ইউরোপের দেশগুলোতে চিকিৎসকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুসারে, অ্যান্টিবায়োটিকের এমন সংকটের কারণ হলো, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজনীয় উপাদনের সরবরাহ পাচ্ছে না। বিশেষ করে অ্যান্টিবায়োটিক মোড়কজাতকরণের উপাদানের অভাব ও বিদ্যুৎ ঘাটতি। চীনের জিরো কোভিড নীতি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণে এমনটা হয়েছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

সুইজার‌ল্যান্ডের বিখ্যাত ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নোভারটিসের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্যান্ডোজ এরই মধ্যে এমন সংকটের মধ্যে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা অ্যান্টিবায়োটিক মোড়কজাত করার জন্য প্রয়োজনীয় স্ক্রু ক্যাপ পাচ্ছে না।

ইউরোপের আরেক দেশ নেদারল্যান্ডসের অ্যান্টিবায়োটিক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস জানিয়েছে, জ্বালানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবং বিদ্যুৎ সংকটের কারণে তারা অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদনের মূল উপাদান তৈরি করতে পারছে না।

অ্যান্টিবায়োটিকের এই সংকট এরই মধ্যে দেশগুলোর চিকিৎসকদের মধ্যে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এ বিষয়ে প্যারিসের একটি হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ রেমি সলোমন বলেছেন, ‘আমরা অনেক বেশি শঙ্কিত। কারণ, আমরা জানতে পেরেছি এই সংকট আগামী তিন থেকে চার মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।’

ইউরোপের দেশগুলো শীতপ্রধান হওয়ায় সেখানে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের হারও তুলনামূলক বেশি। আর ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে অ্যান্টিবায়োটিক খুবই কার্যকর। তবে জরুরি অ্যান্টিবায়োটিকগুলোর মূল গঠনের কোনো একক প্যাটেন্ট না থাকায় সবাই তা উৎপাদন করতে পারে এবং এ কারণে এর দামও কম হয়।

তবে আসন্ন শীতে রুশ গ্যাসের অভাবে দেশগুলোর নাগরিকদের শীতে বেশ ভুগতে হবে। বিশেষ করে গ্যাসের অভাবে ঘরগুলোর সেন্ট্রাল হিটিং সিস্টেম বেশিরভাগ সময়ই কাজ করবে না। এ অবস্থায় ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিকের সংকট মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিতে পারে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)