অন্ধকারে ইউক্রেনের ১ হাজারের বেশি শহর–গ্রাম

 আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

রাশিয়ার হামলায় বিপর্যস্ত ইউক্রেন। সাম্প্রতিক রুশ বাহিনীর হামলায় এক হাজারেরও বেশি শহর এবং গ্রাম পানি ও বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) হামলা চালানোর পর রাজধানী কিয়েভের একাংশসহ বিভিন্ন শহর বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবার মুখপাত্র অলেক্সান্ডার বলেছেন, ৭ অক্টোবর থেকে রকেট ও ড্রোন হামলায় ৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, গত এক সপ্তাহে রুশ হামলায় ইউক্রেনের ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে দেশটির ১ হাজার ১০০ শহর ও গ্রাম বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

কিয়েভের মেয়র ভাইতালি ক্লিৎসচকো জানান, সর্বশেষ রাশিয়ার হামলায় কিয়েভের পশ্চিমে জাইটোমিরে বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ডিনিপ্রো শহরের জ্বালানি স্থাপনা হামলার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মঙ্গলবার রাশিয়া ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে নয়জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া হামলায় জ্বালানি স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শত শত শহর ও গ্রামে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

ইউক্রেন দাবি করেছে, দেশটিতে সাম্প্রতিক হামলায় ইরানের তৈরি শাহেদ-১৩৬ ড্রোন ব্যবহার করেছে রাশিয়া। ইরান অবশ্য শুরু থেকেই রাশিয়াকে কামিকাজে বা আত্মঘাতী ড্রোন সরবরাহের বিষয়টি অস্বীকার করে এসেছে। ক্রেমলিনও ইরানি ড্রোন ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে রাশিয়া ইরানি ড্রোন ব্যবহার করেছে কি না জানতে চাইলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মঙ্গলবার বলেছেন, এগুলো ব্যবহারের বিষয়ে ক্রেমলিনের কাছে কোনো তথ্য নেই।

এ বিষয়ে আরও প্রশ্ন থাকলে তা রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে এ নিয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত প্রথমবারের মতো কিয়েভের কেন্দ্রে সরাসরি হামলা চালালো রুশ বাহিনী। তবে চলতি সপ্তাহের শুরুতে পুতিন বলেছিলেন, ইউক্রেনে বড় ধরনের হামলার আর প্রয়োজন নেই। এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট স্টাফের প্রধান অ্যান্ড্রি ইয়ারমাকও জানিয়েছেন যে, ইউক্রেনে সর্বশেষ ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।

বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নর্ড স্ট্রিম

রাশিয়া থেকে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহে ব্যবহৃত পাইপলাইনে বিস্ফোরণের ঘটনায় নতুন তথ্য সামনে এনেছে ডেনমার্কের পুলিশ। একই ধরনের কথা বলছে সুইডেনও। তারা বলছে, শক্তিশালী বিস্ফোরণের কারণে এই গ্যাস পাইপলাইনে লিকেজ হয়েছে।

সুইডেনের গণমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত খবর ও বিস্ফোরণের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, বিস্ফোরণে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন-১-এর ৫০ মিটার ধসে গেছে। তবে এই বিস্ফোরণ ঠিক কী কারণে হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে এখনো তা জানা যায়নি। এ ছাড়া কারা এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, সে সম্পর্কেও কিছু বলা হয়নি।

অবশ্য রাশিয়া গতকাল বলেছে, তাদের ওপর দায় চাপানোর জন্য এই তদন্ত করা হচ্ছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘জার্মানি, ফ্রান্স, ডেনমার্কের তদন্ত সম্পর্কে আমরা যা জানতে পেরেছি তা হলো, রাশিয়ার ওপর দায় চাপানোর জন্য এই তদন্ত করা হচ্ছে।’

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)