সাতক্ষীরা ইসলামী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় শিশু মৃত্যুর ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের
লিখিত অভিযোগে শিশু আয়েশার বাবা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের সরসকাটি গ্রামের ক্ষেত্রপাড়ার বাসিন্দা আনারুল গাজী তার ০৮দিন বয়সী শিশু কন্যার মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা এবং অবহেলাকে দায়ী করে এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিভিল সার্জনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এদিকে শিশু আয়েশা মৃত্যুর ঘটনায় ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল সাতক্ষীরা লিমিটেড কর্তৃপক্ষের অবহেলার একটি ভিডিও এবং গণমাধ্যমের বস্তুনিষ্ট সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাতে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। হাসপাতালের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের পাশাপাশি আয়েশা মৃত্যুর ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নানাবিধ মন্তব্য করছেন নেটিজেনরা।
সাতক্ষীরার বেশিরবাগ সামাজিক-স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতা সংগঠনগুলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা এবং আয়েশা হত্যার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল সাতক্ষীরা লিমিটেডকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন।
তবে এ ঘটনায় এখনো মুখে কুলুপ এটে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল সাতক্ষীরা লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। অফিশিয়ালি তারা এ নিয়ে কিছু না জানালেও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে, ‘দায়িত্বে অবহেলার কারণে আয়েশার মৃত্যু হয়নি’ বলে দাবি করেছেন হাসপাতালটির এডমিন আনোয়ার হোসেন।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ০৬টার দিকে শিশু আয়েশাকে রক্তশূণ্যতা জনিত অসুস্থতার কারণে ‘শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল’ কলারোয়ার চিকিৎসক ডা. ঈসমাইলের পরামর্শে ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল সাতক্ষীরা লিমিটেডে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটির শারিরীক অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হাসপাতালে তিন দিন ভর্তি রেখে রক্ত দিলেই সে আবারও সুস্থ্য হয়ে উঠবে বলে জানান।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথামতো রক্তের ব্যাবস্থা করা হয় কিন্তু ইসলামী হাসপাতালের কেউ ওই শিশুকে ক্যানোলা পরাতে পারবেনা বলে জানায়। ফলে বাধ্য হয়ে শিশুটিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে ক্যানোলা পরিয়ে আনা হয়। রক্ত ও ক্যানোলা রেডি করার পর কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ইসলামী হাসপাতালের কোন চিকিৎসক বা নার্স আয়েশার পাশে আসেনি। আয়েশার বাবা বারবার নিচতলা থেকে উপরতলা পর্যন্ত হাসপাতাল কতৃপক্ষের কাছে ছুটে গিয়ে তার বাচ্চাকে দেখার অনুরোধ জানালেও তারা বাচ্চার পাশে আসেনি। একপর্যায়ে রাত সাড়ে এগারোটার দিকে শিশু আয়েশার মৃত্যু হয়।