কালিগঞ্জে শ্যালকের হাতে ভগ্নিপতি খুন
রঘুনাথ খাঁ :
ভাগ্নের বিরুদ্ধে মাছ চুরির প্রতিবাদ করতে এসে বিরোধে জড়িয়ে ভগ্নিপতিকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে শ্যালক। এ সময় মারাত্মক ঝকম হয়েছেন নিহতের স্ত্রী মজিদা। বৃহষ্পতিবার দুপুর দুটোর দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিযনের রঘুনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত মাজিদাকে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। হত্যাকাÐে ব্যবহৃত শাবল ও কোদাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম সামছুর রহমান গাজী (৫৫)। তিনি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত অবের আলীর ছেলে।
রঘুনাথপুর গ্রামের শাহীনুর রহমান জানান, রঘুনাথপুর বিলে তার ও তার বাবা সামছুর রহমান গাজীর পৃথক মাছের ঘের রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বর্ষার সময় তার ভাই মিজানুর পরিহিত জামা ও গেঞ্জি খুলে ভেড়ির উপরে রেখে বাবা সামছুরের ঘেরে মাছ ধরতে যায়। কিঠছুক্ষণ পর পার্শ্ববর্তী কয়েকজন ঘের পাহারাদার চোর চোর বলে চিৎকার করলে মিজানুর জামা কাপড় ফেলে বাড়ি চলে আসে। ওই জামা গেঞ্জি নিয়ে পার্শ্ববর্তী ঘের মালিকরা কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভিনের কাছে বুধবার সকালে জমা দেন। চেয়ারম্যান বৃহষ্পতিবার সকালে গ্রাম পুলিশ আব্দুর রহিমকে সামছুরের বাড়িতে পাঠিয়ে তার সঙ্গে মিজানুরকে দেখা করতে বলেন।
শাহীনুর আরো জানান, নানা আরশাদ আলীর জীবদ্দশায় দুই মামা ফজর আলী ও আহাদ সব জমি লিখে নেয়। এতে পৈতৃক সম্পদ থেকে বঞ্চিত হন তার মা মজিদা। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মামার বাড়ি যাতায়াত নেই। তাদের সঙ্গে নেই কোন সম্পর্কও। ভাই মিজানুরের বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে নালিশ হওয়ায় মামা ফজর আলী ও আহাদ আলী বৃহষ্পতিবার দুপুর দুটোর দিকে হাতে কোদাল ও শাবল নিয়ে তাদের বাড়িতে এসে ভাই মিজানুরকে খুজতে থাকে। তাকে না পেয়ে চিৎকার চেচামেচি শুরু করায় বাবা প্রতিবাদ করলে মামা ফজর আলী তাকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। বাবাকে রক্ষায় ছুটে গেলে মা মাজিদার ডান হাতের মাংশপেশীর মধ্যে শাবল ঢুকিয়ে দেয় ছোট মামা শাহীনুর। স্থানীয়রা মা ও বাবাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। মাকে উপজেলা স্ব্স্থ্যা কমপ্লে ক্সে ভর্তি করা হয়।
কৃষ্ণনগর ইউপির সাবেক সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, ফজর আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, ডাআতি, মাদকসহ এক ডজনের উপর মামলা রয়েছে। সে একজন সন্ত্রাসী।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হালিমুর রহমান জানান, ঘাতক ফজর আলী ও তার ভাই আহাদ পালিয়ে গেছে। হত্যাকাÐে ব্যবহৃত কোদাল ও শাবল উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের ময়না তদন্তের জন্য শুক্রবার সকালে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।