সঞ্চয় ভেঙে সংসার চালাতে হচ্ছে জার্মানদের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
অর্থনৈতিক সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে ইউরোপের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশ জার্মানি। এই সংকটের সরাসরি প্রভাব এসে পড়েছে দেশটির সাধারণ জনগণের দৈনন্দিন জীবনেও।
জার্মানির অর্থনীতি বিষয়ক এক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির অধিকাংশ মানুষ এখন জীবনযাপনের খরচ সংকুলান করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন৷ মজুরি বা বেতন যা পান তাতে চলছে না তাদের।
মিউনিখভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইফো ইন্সটিটিউট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর জার্মানিতে মুদ্রাস্ফীতি এবং দ্রব্যমূল্য এমন বেশি হারে বেড়েছে যে পণ্য ক্রয় করতে গিয়ে সবাই খুব বিপদে পড়ছেন। নিয়মিত আয়ে চলছে না। তাই জমানো টাকায় হাত দিতে হচ্ছে প্রায় সবাইকে।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) প্রকাশিত হয় ইফো ইন্সটিউটের এই প্রতিবেদন। সেখানে প্রতিষ্ঠানটির অর্থনীতি বিষয়ক গবেষণা দলের প্রধান টিমো ভলমার্শহয়জার জানান, করোনা মহামারি চলাকালীন অনেক জার্মানের সংসারখরচ অনেক কমেছিল। বেশ বড় একটা সময়, বিশেষ করে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত জার্মানরা ভালো অঙ্কের টাকা সঞ্চয় করেছেন। ওই সময়ে জার্মানদের মোট সঞ্চয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭০ বিলিয়ন ইউরো (৬৯.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), যা কিনা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।
কিন্তু ভলমার্শহয়জার জানান, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পরিস্থিতি এতটাই বদলে গেছে যে ২০২২ শুরুর দিকেই অবস্থা হয়ে যায় সঙ্গীন। ইফো ইন্সটিটিউটের অর্থনীতি বিষয়ক গবেষণার প্রধানের ভাষায়, ২০২২ সালের প্রথম চার মাসে তা (সঞ্চয়) দ্রুত শেষ হতে থাকে।
জার্মানির মানুষ পণ্য ক্রয় করতে গিয়ে এখনো হিমশিম খাচ্ছেন জানিয়ে ভলমার্শহয়জার বলেন, ২০২২ সালের দ্বিতীয় চতুর্থাংশেও সেই অবস্থা প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক হারে বাড়লেও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়েনি। ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে সরকারের সাম্প্রতিক সমঝোতা অনুযায়ী দ্রব্যের অগ্নিমূল্যের এই সময়ে বেতন যে হারে বাড়ানোর কথা সেভাবে বাড়েনি।
হা্ন্স ব্যোকলার ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতির বড় রকমের উন্নতি হবে এমন সম্ভাবনাও আপাতত দেখা যাচ্ছে না। তাদের বিশ্লেষণ বলছে, সমঝোতার পর জার্মানিতে বেতন বাড়ানো হয় ২.৯ ভাগ, তবে দ্রব্যমূল্য যেহারে বেড়েছে তাতে মানুষের আয়ের অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে ৩.৬ ভাগ।