টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা সনদ বিক্রির অভিযোগে শ্যামনগর হাসপাতালের অফিস সহকারী জাহাঙ্গীরকে বদলী
আশিকুজ্জামান লিমন, শ্যামনগর
টাকার বিনিময়ে চাহিদামত চিকিৎসা সনদ সরবরাহের অভিযোগে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর আলমকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সিএস/সাত/শা-১/২০২২ নম্বর স্মারকে গত ১১ আগস্ট বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। অফিস আদেশ জারির তিন দিনের মধ্যে তাকে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করতে বলা হয়। সাতক্ষীরা জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় হতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের পরপরই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়।
উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীর আলম টাকার বিনিময়ে শ্যামনগর হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পক্ষে-বিপক্ষে চিকিৎসা সনদ সরবরাহ করেন বলে সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে। আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরতসহ জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চারজন ভুক্তোভোগী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেন। এক পর্যায়ে গত ২১ জুলাই সিভিল সার্জনের কার্যালয় হতে গঠিত ৫ সদস্যের তদন্ত টিমের সদস্যরা মনোয়ারা খাতুন নামের এক ভুক্তোভোগী নারীর অভিযোগের তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান।
জানা যায় শ্যামনগর উপজেলার নওয়াবেঁকী গ্রামের মুত মকবুল হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম গত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত। তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা একটি সিন্ডিকেট হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের চিকিৎসা সনদ সরবরাহের নামে মাথাপিছু ১৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। ভর্তি হওয়া রোগীদের পক্ষে বিপক্ষে মিথ্যা চিকিৎসা সনদ সরবরাহের পাশাপাশি অনেক সময় রোগীর বিপক্ষে মিথ্যা সনদ দিয়ে একটি পক্ষকে আইনী সহায়তা প্রাপ্তির সুযোগ করে দিতেন বলেও অভিযোগ।
সাতক্ষীরা জেলা সিভিল সার্জন ডা: মো: হুসাইন শাফায়াত স্বাক্ষরিত অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরের বদলী সংক্রান্ত আদেশের কপি পরিচালক (স্বাস্থ্য) খুলনা বিভাগসহ শ্যামনগর ও কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দপ্তরে পাঠানো হয়।
এদিকে বদলী করা হলেও সত্য চিকিৎসা সনদ দেয়ার শর্তে তার নিকট থেকে জাহাঙ্গীর কর্তৃক আদায়কৃত টাকার কোন ব্যবস্থা না হওয়ায় মনোয়ারা খাতুন অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তিনি প্রতিবেদককে জানান জাহাঙ্গীরের দাবিকৃত টাকার জোগাড় করতে যেয়ে তিনি সমিতি থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে প্রতিপক্ষের নিকট থেকে বেশি টাকা নিয়ে তার জখমের বিষয়ে ভুল চিকিৎসা সনদ দেওয়ায় আসামীরা জামিন নিয়ে বাইরে এসে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। প্রভাবিত হয়ে মিথ্যা চিকিৎসা সনদ দেয়ায় তার মামলা গুরুত্ব হারানোর পাশাপাশি তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার দাবি করে সমুদয় টাকা ফেরত চান।