ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে সমস্যা সমাধানের দুই পথ দেখাল রাশিয়া

চলমান সমস্যা সমাধানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সামনে দু’টি বিকল্প পথ খোলা আছে বলে মনে করেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমানে দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা রাশিয়ান সিকিউরিটি কাউন্সিলের উপ প্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ।

শুক্রবার (১২ আগস্ট) রুশ সাংবাদিক নাদানা ফ্রিডরিখসনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেদভেদেভ বলেন, ‘আমি মনে করি এখন তার সামনে দু’টি পথ খোলা আছে— ১) তিনি তার পুরনো কমেডি শোর মঞ্চে ফিরে গিয়ে পুনরায় তার অভিনয় ক্যারিয়ারের দিকে মন দিতে পারেন অথবা— ২) তিনি সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখী হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন।’

রাশিয়ার নাগরিকরা যেন ইউরোপের কোনো দেশে ঢুকতে না পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কয়েক দিন আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন জেলেনস্কি। সেই আহ্বানের পর মেদভেদেভ জেলেনস্কিকে অ্যাডলফ হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।

২০১৯ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হন ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার আগে পেশাদার কৌতুক অভিনেতা ছিলেন তিনি।

২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইউক্রেনে ‘সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল’ নামের একটি টিভি সিরিজ খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। হাইস্কুলের এক ইতিহাস শিক্ষক কীভাবে দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে ওঠেন— এই ছিল সিরিজটির মূল কাহিনী। জেলেনস্কি সেই টিভি সিরিজের প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।

কমেডি শো এবং অভিনয় সূত্রে পাওয়া ব্যাপক জনপ্রিয়তাই ছিল ২০১৯ সালের নির্বাচনে তার জয়ের মূল ভিত্তি।

তবে রাশিয়ার সঙ্গে সম্প্রতি যে যুদ্ধ ইউক্রেনের শুরু হয়েছে, সেজন্য ইউক্রেনের অনেক রাজনীতিবিদ জেলেনস্কির রাজনৈতিক অদক্ষতা ও অদূরদর্শীতাকেই দায়ী করেন। ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট পিউতর পোরোশেনকো সম্প্রতি স্বীকার করেছেন, ২০১৪ সালে রাশিয়ার কাছে ক্রিমিয়া হারানোর পর থেকেই সামরিক সামর্থ্য বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সঙ্গে গোপন আঁতাত শুরু করেছিল কিয়েভ, যা জেলেনস্কির সময় আরও বৃদ্ধি পায়।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণার ‍দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।

শুক্রবার ১৬৫তম দিনে গড়িয়েছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। এই চার মাস সময়ের মধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্ক, ইউক্রেনের দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম, মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে।

সূত্র: আরটি

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)