ভোমরা স্থল বন্দর কয়লা পাচারের অভিযোগে বসিরহাটের বারিক বিশ্বাস গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার:

অবশেষে ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী সিআইডি’র হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন বসিরহাটের কুখ্যাত পাচারকারী আব্দুল বারিক বিশ্বাস। তাকে কয়লা পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে সেদেশের সিআইডি। শুক্রবার কলকাতা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারতীয় একটি গণমাধ্যম এ খবর প্রচার করেছে।

প্রাপ্ত খবর থেকে জানা যায়, বসিরহাটের কুখ্যাত কালোবাজারি আব্দুল বারিক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক ভোমরা স্থলবন্দরে প্রবেশে সিরিয়ালের নামে চাঁদাবাজিসহ একাধিক অভিযোগ আছে। তিনি এর আগেও গরু পাচার কান্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগে ভারতীয় বিভিন্ন বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। তার বাড়ি থেকে সে সময় উদ্ধার করা হয় ৪৭ কেজি সোনা। এবার কয়লা পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন তিনি। পশ্চিম বর্ধমানের একাধিক থানায় কয়লা পাচারের অভিযোগ ইসিএলের। জামুরিয়ায় দায়ের হওয়া এফআইআরের ভিত্তিতে কলকাতা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। আগেও আব্দুল বারিক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গরু ও সোনা পাচারের বিভিন্ন অভিযোগ আছে।

এদিকে সাতক্ষীরা ভোমরা স্থল বন্দরগামী ভারতীয় ট্রাক সিরিয়ালের দায়িত্ব পালন করে এই বারিক বিশ^াসের লোকজন। ভোমরার ওপারে ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করে পন্যবাহী ট্রাকগুলো ১৫ দিন থেকে দেড়মাস পর্যন্ত আটক রাখা হয়। তবে, ট্রাক প্রতি ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা প্রদান সাপেক্ষ সরাসরি ভোমরায় আসার সুযোগ করে দেয় এই সিন্ডিকেট। প্রতিদিন ঘোজাডাঙ্গায় আসা পণ্যবাহি ১২০ থেকে ১৫০টি ট্রাক সিরিয়াল ছাড়াই টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশে আসার সুযোগ করে দেওয়া হয়। এছাড়া অন্যান্য ট্রাকগুলো ১৫ থেকে ৪৫দিন সেখানে আটক থেকে বারিক বিশ^াসের লোকজনের দেওয়া সিরিয়াল মেনে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ট্রাক থেকে আদায়কৃত এই টাকা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা প্রদান করেন। ফলে আমদানী খরচ বেড়ে যাওয়ায় এই বন্দর ত্যাগ করে অনেক ব্যবসায়ী অন্য বন্দরে চলে গেছেন।

উল্লেখ্য, ভোমরা স্থল বন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন সিরিয়ালের নামে চাঁদাবাজি বন্ধে ইতোপূর্বে আন্দোলনের ডাক দিলেও তা ব্যর্থ হয়। চলতি বছরের শুরুতে গত ২৫ জানুয়ারি থেকে ভোমরা স্থল বন্দরের ৮টি সংগঠনের যৌথ সিদ্ধান্তে তিন দিনব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি ও খন্ডকালীন কর্মবিরতি পালন করে এবং আন্দোলন কর্মসূচি সফল করতে সিএন্ডএফ এজেন্ট রামকৃষ্ণ চক্রবর্তীকে আহ্বায়ক করে দশ সদস্য বিশিষ্ট একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করে।

গত ২৭ জানুয়ারি আন্দোলন চলমান অবস্থায় ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের বিগত আহ্বায়ক কমিটির সাথে ঘোজাডাঙ্গা সিএন্ডএফ এজেন্ট ও কার্গো অ্যাসোসিয়েশন এর কর্মকর্তাদের যৌথ বৈঠকে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে প্রচার দিয়ে আন্দোলনের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। এরপর কয়েকদিন চাঁদাবাজির পরিমান কমে আসলেও পরে দ্বিগুন উৎসাহে তা আবার শুরু হয়।

অভিযোগ রয়েছে, ঘোজাডাঙ্গায় প্রতিদিন আদায়কৃত ৭০/৭৫ লাখ টাকার ছিটে-ফোটা সাতক্ষীরার কতিপয় রাজনীতিক ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের মাঝে খুদ-কুড়ো ছিটিয়ে দেওয়ার মতো ভাগ-বাটোয়ারা করে দেওয়া হয়। ফলে তারা বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে আদায় করা এই চাঁদাবাজি বন্ধে কেউ যাতে ভূমিকা রাখতে না পারেন সে ব্যাপারে এপারে তৎপরতা চালান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)