সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে স্ত্রীকে লাথি মেরে হত্যা-স্বামীর ৬ বছর সশ্রম কারাদণ্ড
নিজস্ব প্রতিনিধি:
মৃত্যু ঘটিতে পারে জেনেও স্ত্রীর বুকে ও পিঠে লাথি মারার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করে এক ব্যক্তির ছয় বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক বিশ্বনাথ মণ্ডল এ আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামীর নাম নুরুল ইসলাম। তিনি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী গ্রামের হাািমজউদ্দিনের ছেলে।
মামলার বিবরনে জানা যায়, কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী গ্রামের আরশাদ আলীর মেয়ে শাহানার খাতুনের সঙ্গে একই গ্রামের হামিজউদ্দিনের ছেলে নুরুল ইসলামের ১৯৯২ সালে বিয়ে হয়। নুরুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী থাকায় দ্বিতীয় স্ত্রী শাহানারকে সে প্রায়ই মারপিট করতো। ২০০১ সালের ১২ নভেম্বর রাত নয়টার দিকে এক সের চাল কেনার জন্য শাহানারা খাতুন তার স্বামীর কাছে টাকা চাইলে বচসার একপর্যায়ে তার বুকে ও পিঠে লাথি মেরে জখম করেন। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে গ্রাম ডাক্তার ফজর আলী এসে শাহানারা মারা গেছে বলে জানান। খবর পেয়ে আরশাদ আলী রাত ১২টার দিকে নুরুল ইসলামের বাড়িতে এসে শাহানারাকে মেঝেতে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় স্থানীয়রা নুরুল ইসলামকে আটক করে পরদিন সকালে পুলিশে খবর দেন। এ ঘটনায় শাহানার খাতুনের বাবা আরশাদ আলী বাদি হয়ে জামাতা নুরুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে পরদিন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক নুরুল আমিন ২০০২ সালের ২৬ মে নুরুল ইসলামের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সাফাই সাক্ষ্য প্রদানকালে নিহতের মেয়ে মৌসুমী আক্তার বেবী তার মাকে বাবা লাথি মেরে হত্যা করেছে বলে জানায়।
মামলার নথি ও ১৭ জন সাক্ষীর জেরা ও জবানবিন্দ পর্যালোচনা শেষে আসামী নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মৃত্যু ঘটিতে পারে জানিয়াও স্ত্রীর বুকে ও পিঠে লাথি মারার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় ৬ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন।
কারাদণ্ডাদেশ শুনে কাঠগোড়ায় উপস্থিত নুরুল ইসলাম বলেন, তাকে বিনা দোষে সাজা দেওয়া হলো। আল্লাহ এর বিচার করবেন।
আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. হাবিবুর রহমান বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু।