শ্যামনগরে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ৫ টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
আসাদুজ্জামানঃ
সাতক্ষীরার উপকুলীয় উপজেলা শ্যামনগরের সুন্দরবন সংলগ্ন বুড়িগোয়ালিনীতে ইউনিয়নের পশ্চিম দূর্গাবাটি সাইক্লোনশ্লেটার সংলগ্ন এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর ২০০ ফুট এলাকাজুড়ে উপকুল রক্ষা বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে কমপক্ষে ৫ টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। স্থানীয়দের দাবি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের শ্যামনগরের ৫ নং পোল্ডারের উক্ত অংশের বাঁধ দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ন অবস্থায় ছিল।
বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার দিকে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডর দূর্গাবাটিতে আগেই ভাঙন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকা পাউবোর এই
বেড়িবাঁধের প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ ফুট এলাকায় জোয়ারের তোড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরপর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফের জোয়ার শুরু হলে আবারও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দূর্গাবাটির জরাজীর্ন বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন
দেখা দেয়। যা রাতে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে যায়। এরপর আজ সকালের জোয়ারের তীব্রতে লোকালয়ে আবারো হুহু করে পানি প্রবেশ করতে থাকে। এতে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পশ্চিম পোড়াকাটলা, পূর্ব পোড়াকাটলা, পশ্চিম ও পূর্ব দূর্গাবাটি, আড়পাঙ্গাশিয়া, দাতিনাখালীসহ প্রায় ৫/৬টি গ্রাম নিমিষেই প্লাবিত হয়ে যায়। এছাড়া হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘেরে লোনা পানিতে একাকার হয়ে যায়। ইতিমধ্যে পানি বন্দী হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার।
বুুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়রা স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে রিং বাঁধ নির্মানের কাজ সকালে শুরু করা হয়েছিল। তবে দুপুরের জোয়ারে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। জোয়ার নামতে নামতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। সন্ধ্যায় কাজ করা কঠিন হবে। তিনি অভিযোগ করেন পাশের খোলপেটুয়ানদী থেকে অবৈধভাবে প্রভাবশালীরা বালু উত্তোলন করায় চর দেবে যেয়ে পাশ্ববর্তী অংশের বাঁধে ভাঙন লেগেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের শ্যামনগর অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, খোলপেটুয়া নদীর চর দেবে যাওয়ার কারণে প্রায় ১৫০ থেকে ১৬০ ফুট বেঁড়িবাধ ধ্বসে পড়েছে। সকাল থেকে বাঁশ দিয়ে পাইলিংয়ের কাজ শুরু
হয়েছিল। তবে জোয়ার আসায় কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। পুরো দিনই জোয়ার থাকায় কাজ করার সুযোগ থাকছেনা। রিংবাঁধ নির্মাণের জন্য ১৫ হাজার জিওব্যাগ ও ১লাখ সিনথেটিক ব্যাগ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা।