সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কের পাশে পরে রয়েছে পশু কুরবানির চামড়া!
স্টাফ রিপোর্টারঃ
সাতক্ষীরায় ছাগলের চামড়া ফেলে দিচ্ছেন পশু মালিকরা। একদিকে প্রতিটি চামড়ার মূল্য মাত্র ৫ থেকে ১০ টাকা, অন্যদিকে ক্রেতা সংকট। এ কারণে ফেলে দেওয়া ছাড়া বিকল্প উপায় দেখছেন না তারা। চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, চামড়া ক্রয় করলে আমাদের লোকসান দিতে হয়, বিক্রির কোনো ব্যবস্থা নেই।
এদিকে ক্রেতা সংকট থাকায় সাতক্ষীরার বিনেরপোতা বাইপাস সড়কের পাশে ছাগলের চামড়া ফেলে রাখতে দেখা যায়। ৭০-৮০টি চামড়া পড়ে রয়েছে সেখানে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চামড়ার মূল্য না পাওয়ায় ছাগলের চামড়াগুলো ফেলে দিয়েছেন পশু মালিক ও ব্যবসায়ীরা। বিক্রি না হওয়ায় বিনেরপোতা বাইপাস সড়কের পাশে রাস্তার ধারে ৭০-৮০টি ছাগলের চামড়া ফেলে দেওয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরার তালা সদরের শিবপুর গ্রামের আনার সরদার জানান, ছাগলের চামড়া এখন কেউ ক্রয় করে না। সে কারণে কোরবানির পর চামড়াটি ফেলে দিয়েছি। আগে কোরবানির পর ছাগলের চামড়া ক্রয়ের জন্য ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি আসতেন, এখন কেউ আসেন না।
খড়েরডাঙ্গা গ্রামের মহসিন মোড়ল জানান, একজন ব্যবসায়ীকে ছাগলের চামড়া ক্রয়ের কথা বলেছিলাম, তিনি বলেছেন চামড়াটি নিতে পারি সঙ্গে দুই কেজি লবণ কেনার টাকা দিতে হবে। উপায় না দেখে যারা ছাগল কোরবানি দিয়েছেন সবাই চামড়া ফেলে দিয়েছেন। কেউ কেউ মসজিদ-মাদরাসায় দান করেছেন।
ছাগল ও গরুর চামড়া ক্রয় করেন সাতক্ষীরার বড় বাজারের ব্যবসায়ী জামাল উদ্দীন। তিনি বলেন, আমি ছাগলের চামড়া কিনছি ৫-১০ টাকায়। গরুর চামড়া ১০০ থেকে ৬০০ টাকায়। ছাগলের চামড়া কিনে লোকসান হয়, প্রসেসিং করতে করতে নষ্ট হয়ে যায়। গরুর চামড়াগুলোও ক্রয় করে লবণ দিয়ে প্রসেসিং করে রাখতে হয়। তারপর আবার আমাদের কাছ থেকে ক্রয়ের ক্রেতা নেই। সরকার মূল্য নির্ধারণ করেছে ১০ টাকা ফুট হিসেবে লবণ দেওয়া চামড়া কিনবে। লবণ দিতে হয় ১০ টাকার। আমাদের কাছ থেকে কারা কিনবে সেটি এখনো জানি না।
সাতক্ষীরা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাজমুল হাসান বলেন, মাদরাসা, মসজিদ এতিমখানা ও আড়তে লবণ দিয়ে মজুদ রাখা হচ্ছে কোরবানির চামড়া। ঈদের দিন বিকেলে আমরা পরিদর্শন করেছি। ছাগলের চামড়াগুলো ১০-১৫ টাকা ও আকারভেদে ৪০০-৬০০ টাকায় গরুর চামড়া কিনছেন ব্যবসায়ীরা।
জেলায় আনুমানিক ২০ হাজার গরু কোরবানি হয়েছে। ছাগলের সংখ্যা এখনো জানতে পারিনি। এখন পর্যন্ত পশুর চামড়া ফেলে দিয়েছে এমন খবর আমরা পাইনি। যেখানে ছাগলের চামড়া ফেলে দেওয়ার খবর পাচ্ছি ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যবসায়ী ও পশু মালিকদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
চামড়া যেন নষ্ট না হয় সে বিষয়ে কাজ করছে সরকার। আমরাও বিষয়টি মনিটরিং করছি সার্বক্ষণিক। চামড়া ফেলে দিবে এমন ঘটনা কাম্য নয়।