আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দুটি দোকান ঘরে থাকা ৫০লক্ষ টাকার মালামাল লুটপাট করে দোকান দখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ
সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড় বাজারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাতের আধারে দুটি দোকানঘরে থাকা ৫০লক্ষ টাকার মালামাল লুটপাট করে দোকান দখলের প্রতিবাদে ও দখলীয় দোকান ফেরত পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন শহরের কুখরালী এলাকার মৃত আজহারুল হকের পুত্র ভুক্তভোগী মোস্তাফিজুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি আনুমানিক ২০ বছর পূর্বে সাতক্ষীরা বড় বাজার মসজিদের সামনে সরকারি পেরিফেরি জায়গা (১৮ফুট দৈর্ঘ ও ১৬ ফুট প্রস্থ) মসজিদ কমিটির কাছ থেকে বরাদ্দ নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা পরিচালনা করাকালিন সময়ে ২০১৬ সালের কমিটি রূপায়ন স্টোরের সত্বাধিকারী হাফিজুর রহমানের মধ্যস্থতায় প্রতিমাসে ১ হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে ডিড করে দেওয়ার শর্তে আমাকে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ দেয়। এরপর ২০১৮ সালে মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল গফুরের নেতৃত্বে রমজান আলী খোকন, আনোয়ার হোসেনসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা আলোচনা করে আমার কাছ থেকে নগদ ৩লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন এবং দুটি ৫০ হাজার টাকার ইসলামী ব্যাংকের চেকে মাধ্যমে ১ লক্ষ টাকাসহ মোট ৪ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে এবং দুটি দোকানে মাসিক ৪ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়ার চুক্তিবদ্ধ হই। যা মসজিদ কমিটির ২০১৮ সালের রেজুলেশনে লিপিবদ্ধ আছে। টাকা গ্রহনের পর থেকে বার বার কমিটিকে আমার ডিড করে দেওয়ার জন্য বলা হলেও না দিয়ে তালবাহানা করতে থাকে এবং আমাকে বিতাড়িত করার ষড়যন্ত্র করতে থাকে। বিষয়টি বুঝতে পেরে আমি বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় আবেদন করি। আদালত আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে সেখানে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সদর থানাকে নির্দেশ দেন। এরই মধ্যে গত ১৭ জুন ২০২২ তারিখে আমার দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে থাকা ৫০লক্ষাধিক টাকার মালামাল মসজিদ কমিটির নির্দেশে ইটাগাছা গ্রামের মুকুল হোসেন, পলাশপোল এলাকার হাফিজুর রহমান, কাটিয়ার রমজান আলী খোকন, আনোয়ার হোসেন, প্রাণসায়ের এলাকার তাওহীদ, খালিদ, তারিক ও তুহিনসহ কতিপয় ব্যক্তি আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে রাতের আধারে আমার দুটি দোকানের তালা ভেঙে দোকানে থাকা প্রায় ৫০লক্ষাধিক টাকার মালমাল ও নগদ টাকা ১লক্ষ ৪২ হাজার ১২০ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, সাতক্ষীরার বর্তমান এরশাদ শিকদার সুলতানপুর মুদি বাজার সেক্রেটারি কামরুজ্জামান মুকুল ওরফে চিনি মুকুল। ২০০০ সালে সে লোকের দোকানের সামান্য বেতনে মাইনে খাটত। তার মা লোকের বাড়ি ঝি এর কাজ করতো এখন সে বর্তমান কোটি কোটি টাকার মালিক। এমন কোন কাজ নাই যে সে করেনা। মুকুলের নেতৃত্বে বাজার কমিটির লোকজন ইনকামট্যাক্স, বিএসটিআইসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানের নামে দোকানদারদের কাছ থেকে করে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করেছে। বজারের আমিরুল ও ছাত্তারের দোকান রাতে আধারে লুটপাট করে বের করে দিয়ে পলাশের কাছ লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ঠিক আমাকেও হুমকি দিয়ে বলে তোরও ওই অবস্থা করবো। ব্যবসা করতে গেলে এক লক্ষ টাকা উৎকোচ দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমি একজন অসহায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। আমার ৬টি সন্তান রয়েছে। ওই দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু মসজিদ কমিটি আমাকে ঠকিয়ে ৪লক্ষ টাকা গ্রহণ করে। আবার রাতের আধারে আমার ৫০লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়েছে। এতে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি। ওই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানদুটিই আমার শেষ সম্বল। কৌশলে সে দুটি লুটপাট এবং দখল করে নেওয়ায় আমি পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছি। তিনি এ অভিযোগ করে বলেন, এঘটনার পিছনে বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির মুকুল ও হাফিজ জড়িত। তাদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন ট্যাকিং করলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। তবে, ব্যাপারে সদর থানায় একটি এজাহার জমা দিলেও সেটি রেকর্ড করা হয়নি। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় তার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ফিরে এতে এবং মালমাল উদ্ধার করতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।