বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনে পুলিশের উদ্যোগে অগ্নি-নির্বাপণ মহড়া
মোঃ সাগর হোসেন,বেনাপোল প্রতিনিধিঃ
অগ্নি-নির্বাপণে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন প্রাঙ্গনে এক অগ্নি-নির্বাপণ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। স্টেশন পুলিশের উদ্যোগে ও বেনাপোল ফায়ার সার্ভিসের তত্বাবধানে অগ্নি-নির্বাপণ মহড়ার দিকগুলি জনসমুক্ষে উপস্থাপণ করা হয়। এ ছাড়াও রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় মাদক(মাদক বহণ +সেবন),সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করা,জঙ্গীবাদ দুরীকরণ চোরাচালান রোধ ও আইন শৃঙ্খলার সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিট পুলিশিং কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
বুধবার(২৯ জুন) সকাল ১০টায় বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন প্রাঙ্গনে আয়োজিত ঐ সভায় সভাপতিত্ব করেন স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ সেতাফুর রহমান। উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেনাপোল পোর্টথানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ কামাল হোসেন ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি বর্গের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-সীমান্ত প্রেসক্লাব বেনাপোল এর সভাপতি- মোঃ সাহিদুল ইসলাম শাহীন,বেনাপোল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যালয়ের অফিসার ইনচার্জ-রতন কুমার দেবনাথ,বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন জামে মসজিদের সাবেক ইমাম-আব্দুর রহিম।
পবিত্র কোরআন তেলওয়াত শেষে প্রধান অতিথি মোঃ কামাল হোসেন ভূঁইয়া তার বক্তব্যে বলেন, বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রেল জংশন। বর্তমানে অভ্যন্তরীন এবং আন্তর্জাতিক ভাবে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ চালু রয়েছে এ স্টেশন দিয়ে। অগ্নির ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে অগ্নি-নির্বাপণ পদ্ধতি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা প্রতিটি নাগরিকের একান্ত কর্তব্য। স্টেশন পুলিশের এমন মহতি উদ্যোগ কে তিনি স্বাগত জানান। এ ছাড়াও মাদক পাচার, জঙ্গীবাদ দমন এবং চোরাচালান রোধে কমিউনিটি বিট পুলিশিং এর সকল নির্দেশনার কাজে সহায়তা প্রদানের জন্য এলাকার মানুষের সম্পৃক্ততায় গঠিত নতুন কমিটি’র সকল সদস্যকে স্বাগত জানান।
উল্লেখ্য, বেনাপোল রেলওয়ে পুলিশের সীদ্ধান্তে সীমান্ত প্রেসক্লাব বেনাপোল এর সভাপতি মোঃ সাহিদুল ইসলাম শাহীন কে সভাপতি পদে এবং বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার মোঃ সাইদুজ্জামান কে সাধারণ সম্পাদক করে মোট ১৭ সদস্যের একটি কমিটির নাম ঘোষণা করেন স্টেশন পুলিশ ইনচার্জ এস আই(নিঃ) মোঃ সেতাফুর রহমান।(বিঃ দ্রঃ- মোঃ সেতাফুর রহমান ১০ জুন/২০২১ ইং সনে বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন পুলিশের ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন। তার কর্মকালীন সময় প্রায় ১৫ভ টি মাদক মামলার নথী জমা পড়ে রেলওয়ে পুলিশ বিভাগীয় কার্যালয়ে। তার অগ্নি-নির্বাপণ মহড়ার এই মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে এলাকার মানুষ ।
অগ্নি নির্বাপণের ক্ষেত্রে জনসচেতনতার বিষয়াদী সম্পর্কে উপস্থিত উৎসুক জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ রতন কুমার দেবনাথ বলেন, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্যমতে, অগ্নিকাণ্ডের ক্ষেত্রে অধিকাংশ কারণগুলোর মধ্যে প্রধান কারণগুলো হচ্ছে তিনটি- বৈদ্যুতিক গোলযোগ, চুলা থেকে লাগা আগুন এবং সিগারেটের আগুন। যত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তার ৭২ শতাংশই ঘটে এই তিনটি কারণে। কিন্তু এই কারণগুলো এবং তা থেকে বাঁচার উপায় সাধারণ মানুষজন কতটা জানেন?
চুলার আশপাশে অনেকেই শুকনো পদার্থ, কাগজ, কাপড় বা অন্যান্য দাহ্য পদার্থ রাখেন। শিশুদের হাতের নাগালে গ্যাসের চুলা ও ম্যাচের কাঠি অনেক সময় বিপদের কারণ হতে পারে।
রতন কুমার দেবনাথ আরও বলেন,(১) শুরুতেই আগুন নিভানোর চেষ্টা করুন। (২)আগুন লাগলে বিলম্ব না করে নিকটস্থ ফায়ার স্টেশনে সংবাদ দিন। (৩) বহণযোগ্য অগ্নিনির্বাপনী যন্ত্র ব্যবহার করুন।(৪) বৈদ্যুতিক লাইনে/যন্ত্রপাতিতে আগুন ধরলে পানি ব্যবহার করবেন না।(৫) তৈল জাতীয় পদার্থের আগুনে পানি ব্যবহার করা যাবে না।(৬) গায়ে বা পরনের কাপড়ে আগুন ধরলে মাটিতে গড়াগড়ি করুন। এ সময় তিনি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র এক্সটিংগুইসার বোতল ব্যবহারের নিয়মাগুলি জনসাধারণকে দেখিয়ে দেন।
Please follow and like us: