মাকে পদ্মাসেতু দেখাতে ২০০ কিলোমিটার পাড়ি দিলেন যুবক
ডেক্স নিউজ:
স্বপ্নের সেতু দিয়ে স্বপ্ন যাবে বাড়ি—এমনটাই স্বপ্ন ছিল দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে। পদ্মাসেতু আর স্বপ্ন নয়, এখন বাস্তব। তবে, পদ্মাসেতুর পূর্ণাঙ্গ অবয়ব গড়ে উঠার পর সারাদেশের মানুষের উচ্ছ্বাস ও উল্লাস দেখা গেছে। পদ্মাসেতুর প্রতি যে পুরো দেশের অগাধ ভালোবাসা, তা ফের প্রমাণ করলে প্রায় ২০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে স্বপ্নের সেতুতে আসা মাা-ছেলে।
হবিগঞ্জ সদরের বাসিন্দা পুতুল বেগমের অনেকদিনের ইচ্ছে পদ্মাসেতু ছুঁয়ে দেখার। কিন্তু এতদিনেও সেই স্বপ্নপূরণ হয়নি স্বামী ব্যবসায়ীক কাজে ব্যস্ততার কারণে। তবে তিনি পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর আর লোভ সামলাতে পারেননি। হবিগঞ্জ থেকে মাওয়া; ছেলে মেহেরুজ্জামান সামিরসহ প্রায় ২০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ছুঁয়েছেন স্বপ্নের সেতু, তুলেছেন সেলফি-ছবি।
রোববার তার পদ্মা সেতু দেখার ইচ্ছে পূরণ হয়েছে। মা-ছেলে সেতুতে ঘুরতে এসে একে অপরের ছবিও তুলে দিচ্ছিলেন। সেতুতে যতক্ষণ তারা ছিলেন, তাদের মুখে ছিল বাঁধভাঙা হাসি।
হবিগঞ্জ শহর থেকে আজ ভোর ৬টায় রওনা দিয়ে ঢাকা হয়ে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মাওয়া ঘাট পৌঁছেন তারা। তারপর মাওয়া ঘাট থেকে ৩০০টাকায় মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে পদ্মা সেতুতে উঠেছেন।
মেহেরুজ্জামান সামির বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় অর্জন এই পদ্মাসেতু। মা ইউটিউব ও ফেসবুকে পদ্মা সেতুর বিভিন্ন কার্যক্রমের ভিডিও দেখতেন, নিউজ পড়তেন। তখন থেকেই মা আমাকে বলতেন, একদিন সেতু হবে, সেদিন যেন তাকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি। তাই আমরা ভোরেই রওনা দিই।
পুতুল বেগম বলেন, সেতু দেখার পর মন থেকে দোয়া করেছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। আমার ছেলে অনেক ছবি তুলে দিয়েছে। আমিও ছেলের ছবি তুলে দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। এই সেতু ঢাকার সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলাকে যুক্ত করেছে। রোববার ভোর ছয়টা থেকে টোল দিয়ে সেতুতে সাধারণ যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
ভোরেই শত শত যানবাহন সেতুর টোল প্লাজায় ভিড় করে। অনেক মানুষ গিয়েছিলেন শুধু সেতুটি দেখতে। এ কারণে গতকাল ভোরে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় যানবাহনের চাপ বেশি ছিল। জটও তৈরি হয়। কিন্তু এর জন্য যাত্রায় বড় ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। ফলে মানুষ আনন্দ নিয়ে সেতু পারাপার হয়েছেন।