দেবহাটায় জামাতা কর্তৃক শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দুই আসামী গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার দেবহাটায় স্ত্রীর ডিভোর্স নোটিশ পেয়ে শ্বশুরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন নিহতের জামাতা ও মামলার পলাতক আসামী কালীগঞ্জ উপজেলার বরেয়া গ্রামের মুজিবর সানার ছেলে সালাহউদ্দীন সানার বড়ভাই আলাউদ্দীন সানা এবং তেতুলিয়া গ্রামের আজিবর রহমানের ছেলে আবুজার।
বৃহষ্পতিবার ভোররাতে দেবহাটা থানার ওসি শেখ ওবায়দুল্লাহ ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) তুহিনুজ্জামানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহার নামীয় আসামী আলাউদ্দীন সানাকে প্রথমে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে আলাউদ্দীন সানা’র দেয়া স্বীকারোক্তি মুলোক জবানবন্দীর ভিত্তিতে আবুজারকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরআগে হত্যাকান্ডের পর বুধবার নিহতের ছেলে মিজানুর রহমান বাদী হয়ে সদ্য তালাকপ্রাপ্ত ভগ্নিপতি সালাহউদ্দীন সানা ও তার বড়ভাই আলাউদ্দীন সানাকে এজাহার নামীয় আসামীসহ আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে দেবহাটা থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-০৭/৬১ পি.সি) দায়ের করেন। এজাহার নামীয় ওই দুই আসামী পরষ্পর বাদীর খালাতো ভাই। গ্রেফতারকৃতদের বৃহষ্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
দেবহাটা থানার ওসি শেখ ওবায়দুল্লাহ ভিকটিমের পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, হত্যাকান্ডের শিকার মাটিকুমড়া গ্রামের সুরত আলীর ছেলে আজগার আলী (৫৫) পেশায় দিনমজুর ও কৃষক ছিলেন। দু’বছর আগে তার ছোট মেয়ে শিল্পী খাতুনের সঙ্গে খালাতো ভাই কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের বরয়া গ্রামের মুজিবর রহমানের ছেলে সালাহউদ্দিনের বিয়ে হয়। বেকার সালাহউদ্দীন বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে শিল্পীর ওপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো। একপর্যায়ে সালাহউদ্দীনকে ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে যায় শিল্পী।
এনিয়ে কিছুদিন আগে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে শ্বশুর আজগার আলীকে হেনস্থা ও মারপিট করেন সালাহউদ্দীন। বাবার অপমান এবং সাংসারিক যন্ত্রনা সইতে না পেরে গত ৮জুন সালাহউদ্দীনকে ডিভোর্স দেয় শিল্পী। ডিভোর্সের বিষয়ে শ্বশুরকে দায়ী ভেবে আজগার আলীর ওপর ক্ষুদ্ধ ছিলেন জামাতা সালাহউদ্দীন। মঙ্গলবার রাতের খাবার শেষে প্রতিদিনের ন্যায় বাড়ির বারান্দায় মশারি টাঙিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে রাত ১টার দিতে মামলার আসামী সালাহউদ্দীন, আলাউদ্দীন, আবুজারসহ অন্যান্যরা ঘুমন্ত অবস্থায় আজগার আলীকে নৃশংশভাবে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে।
পরে গুরুতর আহতবস্থায় প্রথমে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানেই চিকিৎসারত অবস্থায় আজগার আলীর মৃত্যু হয়। মামলার মূল আসামী নিহতের জামাতা সালাহউদ্দীনকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওসি শেখ ওবায়দুল্লাহ।