কোরবানির জন্য দেশে উৎপাদিত পশুই যথেষ্ট: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, কোরবানির পশু নিয়ে সংশয়ের কোনো কারণ নেই। দেশে উৎপাদিত পশুই কোরবানির জন্য যথেষ্ট।
তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ উৎপাদনে বাংলাদেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। আমরা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। কোরবানির জন্য ভারত, মিয়ানমার বা অন্য কোনো দেশ থেকে একটা পশুও আনার দরকার নেই। দেশে পর্যাপ্ত পশু আছে। বিদেশ থেকে অবৈধপথে যাতে পশু আসতে না পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বুধবার গাজীপুর জেলার শ্রীপুরে ‘এসিআই অ্যানিমেল জেনেটিক্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদানের আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে শ ম রেজাউল করিম বলেন, কোরবানির সময় প্রতিটি পশুর হাট তদারকির জন্য ভেটেরিনারি ডাক্তার থাকবে। তারা এসব হাটে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন। রোগ সংক্রমিত কোনো পশু বা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ইনজেকশন দেওয়া পশু হাটে আসলে সেটি শনাক্ত করাও সম্ভব হবে।
গোখাদ্যের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভরশীল থাকলে এগিয়ে যাওয়া কঠিন এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গোখাদ্যের জন্য বিদেশ নির্ভরতা কমাতে হবে। সরকার চায়, গোখাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশে শিল্প স্থাপন হোক। এ শিল্প স্থাপনে কর অব্যাহতিসহ সরকার নানা সুযোগ-সুবিধা দেবে। পাশাপাশি কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উৎপাদন বাড়লে এবং ব্যবসায়ীরা মুনাফা কম করলে মাংসের দাম কমবে বলেও তিনি জানান।
এরপর মন্ত্রী এসিআই অ্যানিমেল জেনেটিক্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তারা দেশের প্রাণিসম্পদ খাতকে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় সমৃদ্ধ করেছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রাণিসম্পদ খাতকে সমৃদ্ধ করা হয়েছে।
কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে কৃষির বিস্তার না হলে দেশ থমকে যাবে উল্লেখ করে শ ম রেজাউল করিম বলেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে বিনিয়োগ করায় বাংলাদেশ মাছ, মাংস ও ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। অদূর ভবিষ্যতে দুধেও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। তার (শেখ হাসিনা) সরকার মনে করে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে, তাদের সাহায্য করতে হবে। তারা স্বাবলম্বী হলে দেশ স্বাবলম্বী হবে।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, প্রাণিসম্পদ খাতের খামারিদের সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করছে। কারণ সরকার চায় প্রাণী খাদ্য, মাছের খাদ্য দেশে উৎপাদন হোক। এক্ষেত্রে এসিআই’র মতো অন্যান্য বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে। এসিআই কৃত্রিম প্রজননের সিমেন সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও খামারিদের সরবরাহ করছে।
এসিআই এগ্রিবিজনেসের প্রেসিডেন্ট ড. ফা হ আনসারীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম, গাজীপুরের কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা ইয়াসমিন, শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির হিমু অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, এসিআই লিমিটেডের কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং প্রাণিসম্পদ খাতের উদ্যোক্তা ও খামারিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মন্ত্রী এসিআই’র জেনেটিক্স ল্যাব ও ব্রিডিং স্টেশন পরিদর্শন করেন।