কালিগঞ্জে কলেজ ছাত্রীকে নির্যাতন চালিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে স্বামী ও শ্বশুর আটক
নিজস্ব প্রতিনিধি:
অনার্স পড়ুয়া এক কলেজ ছাত্রীকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। বৃহষ্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে দিকে পুলিশ সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতের স্বামী ও শ্বশুরকে আটক করেছে।
নিহতের নাম শাহীনা রাসুল হাঁসি (২০)। সে কালিগঞ্জ উপজেলার সোনাতলা গ্রামের মাসুদুর রহমান হাসানের স্ত্রী ও একই উপজেলার চাঁচাই গ্রামের আমিরুল ইসলামের মেয়ে।
কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চাঁচাই গ্রামের ফয়সাল আহম্মেদ জানান, ২০২০ সালে কোরবানির ঈদের আগে তার বোন দক্ষিণশ্রীপুর -কুশুলিয়া স্কুল এণ্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী শাহীনা রাসুল হাঁসির সঙ্গে সোনাতলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোবারক আলীর ছেলে মাসুদুর রহমান হাসানের বিয়ে হয়। ভগ্নিপতি বেকার হলেও তার মেয়ে কালিগঞ্জ রোকেয়া মুনসুর ডিগ্রী কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ভগ্নিপতি মাঝে মাঝে তার বোনকে বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলতো। বৃহষ্পতিবার বোনের অনার্স প্রথম বর্ষের ফর্ম পূরণের শেষ দিন ছিল। এ টাকা চাওয়ায় হাসানের সঙ্গে হাঁসির বচসাও হয় বলে শুনেছেন তিনি। বৃহষ্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ভগ্নিপতি মাসুদুর রহমান হাসান মোবাইল ফোনে তাকে জানান যে, বোন হাঁসি আত্মহত্যা করেছে। ১০টার দিকে তিনি বোনের বাড়িতে এসে গোসলখানার আড়ায় ওড়না পেঁচানো ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। বোনের লাশ গোসলখানার মেঝেতে বসা অবস্থায় ঝুলছিল। তার নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। তিনি আশঙ্কা করছেন যে হাঁসিকে নির্যাতন চালিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার প্রচার করা হচ্ছে।
এদিকে মাসুদুর রহমান হাসান জানান, বিয়ের পর হাঁসিকে মাঝে মাঝে অপ্রকৃতিতস্ত অবস্থায় দেখা যেতো। সে বৃহষ্পতিবার সকালে গোসল করতে যেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক নকিব জানান, কালিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। মৃতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মৃতের ভাই ফয়সাল আহম্মেদ বাদি হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতের স্বামী মাসুদুর রহমান হাসান ও শ্ব্শুর মোবারক আলীকে আটক করা হয়েছে।#