সেই পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ এখন  ধর্ষন মামলায় জেলহাজতে

 জহর হাসান সাগর:
খুলনায় কলেজছাত্রীর ধর্ষণ মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) বরখাস্তকৃত পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাসান মাসুদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৮ জুন) দুপুরে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোসা. দিলরুবা সুলতানা তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অলোকা নন্দ দাস বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, মাসুদ ২৬ মে উচ্চ আদালত থেকে এ মামলায় ১৪ দিনের অন্তবর্তীকালীন জামিন পান। আজ উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদের শেষ দিন ছিল। নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে ফের জামিনের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
প্রকাশ,‘গত ১০ মে মঙ্গলবার মাসুদের সঙ্গে ওই কলেজছাত্রীর ফেসবুকে পরিচয় হয়। তখন মেয়েটি তার ছবি অন্য একটি আইডি থেকে ফেসবুকে প্রকাশ হয়েছে বলে, মাসুদের কাছে ফেসবুকের নিরাপত্তা বিষয়ে জানতে চায়। তখন থেকে মাসুদের সহিত কলেজ ছাত্রীর নিয়মিত কথা হত। ‘একপর্যায়ে রোববার দুপুরে ওই ছাত্রীকে ফেসবুকে নিরাপত্তা শেখাতে ডেকে নিয়ে এসে মাসুদ ধর্ষণ করে। পরে মেয়েটিকে হুমকি-ধমকি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তিতে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়।’
এর আগে মাসুদ কর্মরত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলার তালা থানার তদন্ত পরিদর্শক পদে। তার আগে ছিলেন খুলনার তেরখাদা থানার এসআই হিসেবে। এই দুই থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায়ও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি ,নিজে দাড়িয়ে থেকে অন্যর জমি দখল করিয়ে দেওয়া সহ থানা এলাকা জুড়ে চাঁদাবাজি করার অভিযোগের সত্যতা মিললে তাকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) খুলনা কার্যালয়ে সংযুক্ত ছিলেন। সেখানেও নারী কেলেঙ্কারীতে জড়িয়েছেন বলে সত্যতা পাওয়া গিয়েছে।
পিবিআই খুলনাতে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাসান মাসুদের বিষয়ে খোজঁ নিয়ে জানাযায়, তিনি তালা থানায় ১৬ সালের নভেম্বার মাস হতে ১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ওসি তদন্ত থাকাকালীন এক ছাত্রী বিষপানে আতœহত্যার বিষয়ে একজন শিক্ষক কে জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদর্শন করেন। এবং সেই শিক্ষকের কাছ হতে ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। উক্ত চাঁদার টাকা ওসি তদন্তকে দিতে নিষেধ করায় এলাকার যুবসংহতির নেতা বাহরুল ইসলামকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এমনকি নিরীহ বাহারুলের নামে কয়েকটি মিথ্যা মামলা দিয়ে দেওয়া হয়। শুধু মাত্র এমন জঘন্য কাজ করে ক্ষ্যান্ত হননি এই মাসুদ। তিনি নিজে দাড়িয়ে থেকে তালা অদূরে অবস্থিত শাহাপুর গ্রামের দীর্ঘ বছরের দখলীয় জমি মোটা টাকার বিনিময়ে অন্য পার্টির কাছে দখল বুঝে দেওয়া চেষ্টা করেন। এই সময় তালা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান সাংবাদিক এসএম নজরুল ইসলাম দখল কার্যক্রমের ছবি তুলায় তাকে একটি চাঁদাবাজি মামলায় আসামী করেন এই মাসুদ। এমনকি উক্ত জমি দখল করিয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিপক্ষ পার্টির মেয়েদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ও মোটা অংকের চাঁদা আদায় করেছেন বলে জানাযায়। পরে এই মাসুদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হলে তাকে ক্লোজ করা হয়।
তালা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক এসএম নজরুল ইসলাম জানান, মঞ্জুরুল হাসান মাসুদ তালা থানায় তদন্ত ওসি থাকাকালীন শাহাপুর গ্রামের দীর্ঘ বছরের দখলীয় জমি প্রতিপক্ষ পার্টির কাছ হতে মোট টাকার বিনিময় দখল করে দিচ্ছিলেন। সেই সময় আমি ছবি তোলায় আমার নামে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা সহ আমার প্রতিপক্ষদের সাথে আতাত করে থানায় জিডি লিপিবদ্ধ করান। এবং সে এই থানায় থাকাকালীন অনেক মেয়ের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন বলে তথ্য পাওয়া যায়। এ সকল অভিযোগ  তদন্ত করে তালা থানাথেকে ক্লোজ করেন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। দীর্ঘদিন প্রশাসনিক শাস্তি শেষে ততবীর করে স্বপদে দায়িত্ব পেয়ে খুলনায় কলেজ ছাত্রিকে সহায়তার নামে ধর্ষন করেন। এঘটনায় তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করায় আমরা তালাবাসীর পক্ষ থেকে প্রশাসন ও বিজ্ঞ আদালতকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন সহ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)