৩৬ ঘণ্টা পরে ও জ্বলছে আগুন
৩৬ ঘণ্টা পেরোলেও বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তবে নিয়ন্ত্রণকাজ অব্যাহত রেখেছে ফায়ার সার্ভিস।
সোমবার সকালে ডিপোতে গিয়ে দেখা গেছে, ডিপোর ভেতর পশ্চিমপাশে কনটেইনারে জ্বলছে আগুন। আশপাশের কয়েকটি কনটেইনার থেকেও বের হচ্ছে ধোঁয়া। তবে আগুনের তীব্রতা আগের চেয়ে কম বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বলেন, এখানে চার থেকে ছয়টি কনটেইনার রয়েছে। যেগুলোর ভেতরে পানি ঢুকছে না। আমরা কর্তৃপক্ষকে খবর দিয়েছি। তারা দরজাগুলো খুলে দিলে এবং কনটেনারগুলো নামিয়ে দিলে আশা করছি আর অল্প সময়ের মধ্যে আগুন নেভানো শেষ পর্যায়ে আনতে পারব।
তিনি বলেন, ঢাকা থেকে হাজমত টিম আসছে। তারা শনাক্ত করবে কোন রাসায়নিকগুলো ঝুঁকিপূর্ণ, কোনগুলো না। তবে আমরা এখন যে অংশে ফায়ার ফাইটিং করছি সেই অংশে রাসায়নিক দ্রব্য নেই। অন্য অংশে আছে কিনা তা আমাদের টিম পর্যবেক্ষণ করবে। আগুন নেভানো শেষে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করবেন।
একই কথা উল্লেখ করে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন বলেন, পাঁচ থেকে ছয়টি কনটেইনারে এখনো আগুন জ্বলছে। কোনো কোনো কনটেইনার থেকে এখনো ধোঁয়া উঠছে। তবে আজ সোমবার দুপুরের আগেই ডিপোর আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
শনিবার রাত ৮টার দিকে ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতর এ আগুন লাগে। খবর পেয়ে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক থেকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।
বিস্ফোরণের সময় ঘটনাস্থল থেকে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে আশপাশের অনেক বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ার খবরও পাওয়া যায়।
চট্টগ্রামের ডিসি মোহাম্মদ মমিনুর রহমান ও সীতাকুণ্ডের ইউএনও শাহাদাত হোসেনের দেয়া সবশেষ তথ্যে, আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রাণহানি হয়েছে ৪৫ জনের। এর মধ্যে ৯ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। এছাড়া দগ্ধ ও আহত হয়ে চট্টগ্রাম এবং ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন শতাধিক।
চিকিৎসকরা বলছেন, আগুনে দগ্ধদের বেশিরভাগের চোখ ও শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাসপাতালের ৩৬ নম্বর বার্ন ইউনিট ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন অর্ধশতাধিক। বার্ন ইউনিটে আসন সংকটের কারণে ৩১ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা চলছে। আহতদের মধ্যে থেকে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা।